অভিজাত এলাকায় পানির মূল্য বাড়িয়ে নিম্নবিত্তের মানুষ বা বস্তিবাসীকে সাশ্রয় মূল্যে পানি দিতে ওয়াসাকে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
মন্ত্রী আরও বলেন, “শুধু পানি নয় হোল্ডিং ট্যাক্স, গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটিক্যাল সার্ভিসের মূল্যও জোনভিত্তিক নির্ধারণ করা উচিত।”
সোমবার (৩০ মে) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ওয়াসা ভবনে ‘ডিসেমিনেশন সেমিনার অব জয়েন্ট রিসার্চ প্রজেক্ট অন কোভিড-১৯ বাই ঢাকা ওয়াসা অ্যান্ড আইসিডিডিআরবি’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভর্তুকি দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী।
তাজুল ইসলাম বলেন, “গরিব মানুষের কাছ থেকে রাজস্ব নিয়ে ধনীদের কম দামে পানি দেওয়ার সুযোগ নেই। পানির দাম বাড়ানো বা কমানো ওয়াসা কর্তৃপক্ষের বিষয়। ২৫ টাকায় পানি উৎপাদন করে ১৫ টাকায় দেওয়া সমর্থন যোগ্য নয়।”
নিম্নবিত্তের মানুষকে সাবসিডি দিয়ে পানি দেওয়া যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, “যারা উচ্চবিত্ত বা অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন তাদের দেওয়ার সুযোগ নেই। ‘ইকুইটেবল ডেভেলপমেন্ট’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
ওয়াসার পানি নিরাপদ উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, “সেই পানি যখন পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় তখন অনেকে অনৈতিকভাবে পাইপ ছিদ্র করে সংযোগ নেয়। কিন্তু ছিদ্র ঠিকমতো জোড়া না নেওয়ায় অথবা বাসায় পানির রির্জাভ ট্যাংক বা ওভারহেড ট্যাংকের মাধ্যমে পানিতে ক্ষতিকর জীবাণু প্রবেশ করে। যা পরবর্তীতে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।”
এদিকে নতুন পাইপলাইন স্থাপনের পাশাপাশি যারা অবৈধভাবে সংযোগ দিচ্ছে বা নিচ্ছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, “ঢাকা শহরের পানি সরবরাহের জন্য পুরোনো পাইপলাইনগুলো পরিবর্তন করে নতুনভাবে সংযোজন করা হচ্ছে যাতে করে জীবাণুমুক্ত পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়।”
পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ থেকে মানুষকে বাঁচার জন্য সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে এবং এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, “প্রকল্প নেওয়ার সময় ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি, জায়গা অধিগ্রহণ অথবা লোন নেগোসিয়েশনে বছরের পর বছর চলে যায় যা গ্রহণযোগ্য নয়। সব লোন নেওয়া যাবে না। দেশের জন্য অথবা জিডিপিতে অবদান রাখবে এমন লোন নিয়ে প্রকল্প নিতে হবে।”
ঢাকায় চাহিদার তুলনায় বেশি পানি উৎপাদন হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “পাঁচ হাজার বাসাবাড়িতে পানি সরবরাহ করার জন্য পাইপলাইন বসানো হলেও সময়ের ব্যবধানে ঐ এলাকায় জনসংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মানুষ ঠিকমতো পানি পাচ্ছে না। কারণ পানির সরবরাহের তুলনায় ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি।”
করোনার সঙ্গে অন্যান্য কোনো ভাইরাস যাতে ওয়াসার পানিতে না থাকে সেই ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।