সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানকে ধ্বংস করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
শুক্রবার (১২ মে) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘মুক্তিযোদ্ধা মিলনমেলা ২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেননি জিয়া। স্বেচ্ছায় পাকিস্তানকে বেঁচে নেওয়া গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব দিয়েছে এই জিয়া। জিয়া আমাদের সংবিধান থেকে ধর্মনিরেপেক্ষতাকে বাদ ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চালু করেন। আমাদের সংবিধানকে ধ্বংস করেছেন তিনি।”
বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রস্তুতি ছিল না- বিরোধীদের এমন সমালোচনার জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “সিক্রেট ডকুমেন্টসে দেখা গিয়েছে ১৯৪৮ সাল থেকে ২৩ বছরের মধ্যে ১৩ বছর জেলে ছিলেন। এর বাইরে ১৯৪৮ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু কোথায় যেতেন, কি বক্তব্য করতেন সবই তারা লিখতেন।”
‘পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম’ মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, “একাত্তরের দোসর রাজাকার আলবদর আলশামস ও তাদের আত্মীয় স্বজন বাংলাদেশ ছেড়ে একজনও যায়নি। মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার হয়েছে, তবে রাজাকারেরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আসেনি। পরাজয়ের গ্লানিতে তারা ঐক্যবদ্ধ।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান বলেছিলেন যে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে যুদ্ধ করব না, ওয়ার কাউন্সিলের অধীনে যুদ্ধ করব। তবে আমরা সবাই একই আদর্শে যুদ্ধ করেছিলাম। তবে মুক্তিযুদ্ধে অনেক অনুপ্রবেশকারী ছিল যারা যুদ্ধ করলেও পরে চেতনাবিরোধী হয়ে যান।”
মোজাম্মেল হক বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধীরা এই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন কিন্তু তাদের দোসররা দেশে রয়ে গেছেন। দুর্ভাগ্য যে, অনেক মুক্তিযোদ্ধারাও বিরোধীদের পক্ষ করেন। পরাজিত শক্তিরা সবসময় ঐক্যবদ্ধ, বিপরীতে আমরা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছি। সময় এসেছে স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোকদের এক হওয়ার। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে পরাজিতদের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও যেন স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।”
মোজাম্মেল হক আরও বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কিছু দাবি রয়েছে। সে দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করা হয়েছে।”
সাব-সেক্টর কমান্ডার মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ।