সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার শিলাস্তি রহমানসহ তিন আসামির আরও পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে শুক্রবার (৩১ মে) এ আদেশ দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালত।
তবে আদেশের আগে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু। এসময় আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
শুনানির একপর্যায়ে বিচারক আসামি শিলাস্তি রহমানকে জিজ্ঞেস করেন, “আপনি কি আইনজীবী নিয়োগ করতে চান?” বিচারকের প্রশ্নের জবাবে শিলাস্তি তাৎক্ষণাত বিচারককে জানিয়ে দেন তিনি কোনো আইনজীবী নিয়োগ দিতে চান না।
বিচারক একই প্রশ্ন অপর দুই আসামিকেও করেন। এসময় দুই আসামি একে অপরের দিকে চেয়ে পরে পুলিশকে জানান তাদের পক্ষে আইনজীবী নেই, তবে মামলা লড়তে তারা আইনজীবী চান তারা।
শুনানি শেষে আসামিদের একে একে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) গাড়িতে তোলা হয়। এ সময় শিমুল ভূইয়া ও তানভীরকে হেলমেট পরিয়ে আদালত থেকে বের করা হলেও শিলাস্তি রহমানের মুখে ছিল মাস্ক।
আদালত থেকে বের হওয়ার সময় শিলাস্তি মাথায় ওড়না ব্যবহার করে লম্বা ঘোমটা দিয়ে রেখেছিলেন। পাশে থাকা দুই নারী পুলিশ সদস্যর কাঁধে মুখ লুকিয়ে আদালত থেকে বের হয়ে পরে ডিবির গাড়িতে ওঠেন।
এর আগে গত ২৪ মে প্রথম আদালতে আনা হয়েছিল শিলাস্তিকে। শুনানির সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে উচ্চস্বরে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। বলেছিলেন, আমি তো আসামি নই, আমাকে কেন আনা হয়েছে। আমি নির্দোষ।
এদিকে, শুক্রবার (৩১ মে) শুনানিতে তিনি ছিলেন অনেকটা শান্ত। প্রশ্ন উঠেছে কেন শিলাস্তি রহমান মামলা লড়তে আইনজীবী চান না? অনেকেই বলছেন, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের মামলায় তিনি ফেঁসে গেছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে কঠোর বার্তা। ফলে অভিমানে মামলা লড়তে আইনজীবী নিয়োগে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এমপি আনার গত ১২ মে কলকাতায় গিয়ে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানতে পারেন, কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজে বড় ট্রলি ও প্লাস্টিক ব্যাগ হাতে ওই ফ্ল্যাট থেকে দুইজনকে বের হতে দেখা যায়। যাদের একজন সৈয়দ আমানুল্লাহ পরিচয় দেওয়া চরমপন্থী শিমুল ভূঁইয়া ও অন্যজন শিলাস্তি রহমান। তদন্তসংশ্লিষ্টদের ধারণা, সেসব ট্রলি ও প্লাস্টিক ব্যাগেই এমপি আজীমের খণ্ডিত মরদেহ সরানো হয়ে থাকতে পারে।
সেই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে শিলাস্তি রহমানসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এমপি আজীমকে অপহরণের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলায় শিলাস্তি রহমানসহ আটককৃতদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। একই মামলায় গত ২৪ মে তিনজনকে আট দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।