• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘূর্ণিঝড় কেন হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৩, ০৪:১৩ পিএম
ঘূর্ণিঝড় কেন হয়

বাংলাদেশের অবস্থান ভৌগলিক কারণেই সমুদ্রের পাশে। তাই বারবার সমুদ্র থেকে সৃষ্ট নানা দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয় বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকা সমতল। তাই এ ধরনের দুর্যোগে ক্ষতিও হয় বেশি। একে তো সমতল, তার ওপর ঘনবসতি। বসতি বেশি ঘন হলে অল্প আঘাতেই আক্রান্ত হয় অনেক মানুষ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়ে যায় অনেক।

ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি
সমুদ্র থেকে জন্ম নেওয়া দুর্যোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ঘূর্ণিঝড়। সমুদ্র ছাড়াও ঘূর্ণিঝড় হতে পারে, তবে সেগুলো সমুদ্রের ঝড়গুলোর মতো শক্তিশালী হয় না। সমুদ্র একাই ঘূর্ণিঝড় তৈরি করে, ব্যাপারটা এমন নয়। সূর্যের প্রভাব, বায়ুমণ্ডলের প্রভাব, বায়ুর ঘনত্বের প্রভাব, তাপমাত্রার পার্থক্যের প্রভাব ইত্যাদি অনেক বিষয় জড়িত থাকে একটা ঘূর্ণিঝড়ের পেছনে।

ঘূর্ণিঝড়ের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
প্রবল বেগে ছুটে আসা বায়ু ঘূর্ণির মূল অংশ তথা অক্ষের দিকে গিয়ে সংকুচিত হয়। বায়ুর সংকোচন হলে সেখানকার তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে বায়ু ওঠে যায় ওপরে। এই শূন্যতা পূরণে ছুটে আসে আরও বায়ু। পৃথিবী যদি তার নিজের অক্ষের ওপর স্থির থাকত, তাহলে বাতাসের এই প্রবাহ অনেকটা সরল পথেই আসত। কিন্তু পৃথিবী অক্ষীয়ভাবে ঘুরছে বলে বায়ুর চলাচল কিছুটা বেঁকে যায়। তার সাথে পদার্থবিজ্ঞানের ঘূর্ণন ও কৌণিক ভরবেগের কিছু নিয়মের প্রভাবে সেই বায়ুপ্রবাহে তৈরি হয় ঘূর্ণি। ঘুরতে ঘুরতে এগিয়ে আসে সামনের দিকে। পর্যায়ক্রমে এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকে। ফলে একটু একটু করে বাড়তে থাকে ঘূর্ণির শক্তি। এই ঘূর্ণির ভেতরে যা-ই পড়ে, তা-ই লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায়। দশতলা বাড়ি মাটি থেকে উপড়ে আকাশে তুলে ফেলা যেন এই ঘূর্ণির শক্তির কাছে মামুলি ব্যাপার। একটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে যে পরিমাণ শক্তি থাকে, তা হাইড্রোজেন বোমার চেয়েও শক্তিশালী।

ঘূর্ণিঝড় প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে
ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপারটা যে পুরোপুরি নেতিবাচক, এমন কিন্তু নয়। ঘূর্ণিঝড় একটা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া এবং প্রকৃতি তার ভারসাম্য রক্ষার জন্যই এ ধরনের ঘটনা ঘটায়। ঘূর্ণিঝড় কিংবা এরই নামান্তর মৌসুমি বায়ু আমাদের জন্য খুবই দরকারি। বায়ুর চাপ ও তাপের এই আদান-প্রদান না থাকলে অত্যধিক গরমে কিংবা অত্যধিক শীতে মানুষের জীবন হয়ে যেত বসবাসের অনুপযোগী। তীব্র শীতে কিংবা তীব্র গরমে জীবন হয়ে যেত অতিষ্ঠ।

আবহাওয়া সতর্কতার স্কেল
আবহাওয়ার খবরগুলোতে প্রায়ই ৬ নম্বর, ৭ নম্বর কিংবা ৮ নম্বর সতর্কতা সংকেতের কথা বলা হয়। কিন্তু এসব নম্বরের মানে কী? এগুলো দিয়ে কী বোঝানো হয়? এগুলো মূলত একটা স্কেলের বিভিন্ন অবস্থার অংশ। ঝড়ের তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে ১ নম্বর থেকে ১২ নম্বর পর্যন্ত মোট ১২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আবহাওয়ার বিশেষ এই স্কেল তৈরি করেছিলেন ফ্রান্সিস বিউফোর্ট নামের নৌবাহিনীর একজন অ্যাডমিরাল। প্রায় দুই শ বছর আগে তিনি এই স্কেল তৈরি করেছিলেন। সে সময় আবহাওয়া পরিমাপের তেমন কোনো যন্ত্রপাতি ছিল না। তাঁর তৈরি করা পদ্ধতি অনুসারে কোনো যন্ত্র ছাড়াই আবহাওয়ার অবস্থা বোঝা যেত। তাঁর নামানুসারে এ স্কেলকে বলা হয় বিউফোর্ট স্কেল।

Link copied!