দেশের সড়কগুলোতে সাধারণ ৬০-৭০ গ্রেডের পিচ (বিটুমিন) ব্যবহার করা হয়। এসব গলে যেতে পারে ৪৮ থেকে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্রায়। তবে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এমন উচ্চতর তাপমাত্রার কোনো রেকর্ড নেই। অথচ বর্তমানে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলেই গলে যাচ্ছে সড়কের পিচ। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা (৪১-৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অনুভূত হওয়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত জেলাগুলোতে অনেক সড়কের পিচ গলে যাচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে ৪১-৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেই যদি এসব সড়কের পিচ গলে যায়, তাহলে তাপমাত্রা আর বাড়লে কী পরিণতি হবে? এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিপ্তরের (সওজ) কর্মকর্তারা। তারা জানাচ্ছেন, তিনটি কারণে ৪০-৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেই গলে যাচ্ছে সড়কের পিচ।
প্রথমত, বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ থাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি হলেও পিচের উপরিভাগের বাতাসের তাপমাত্রা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৫ ডিগ্রির বেশি। দ্বিতীয়ত, কালো রঙের পিচ সূর্যের তাপ শোষণ করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তৃতীয়ত, যানবাহনের চাকার ঘর্ষণে প্রচণ্ড তাপ উৎপন্ন হয়। যা পিচের গলনাঙ্ক অতিক্রম করে। ফলে গলতে শুরু করে সড়ক, মহাসড়কের পিচ।
সওজ সূত্রমতে, আগে ৩০-৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহনীয় ৮০-১০০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হতো। তবে এখন ৬০-৭০ গ্রেডের পিচ ব্যবহার করা হয়। যা ৪৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গলে যায়। আর সরকারি প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি উৎপাদিত পিচের গলনাঙ্ক ৫২ থেকে ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া পলিমার মডিফাইড বিটুমিনের (পিএমবি) গলনাঙ্ক ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। যা ব্যবহার করা হয় বিআরটি প্রকল্পে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এসব পিচ ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে এসব সড়ক ৪১-৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গলে না।