গ্যাসের ওপর দেশ ভাসছে বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেছেন, “দেশে এত গ্যাস মজুতের পরও কেন রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না, সেটি ভাবনার বিষয়।”
শনিবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনের এ টি এম শামসুল হক হলে ‘জ্বালানি সংকট ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন’ শীর্ষক নাগরিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খনিজ ও ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বদরুল ইমাম, অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সুশান্ত কুমার দাস, নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম প্রমুখ।
রাশেদ খান মেনন বলেন, “দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি সোর্স থাকা সত্ত্বেও আমরা সব জ্বালানি খাতকে আমদানিনির্ভর করে ফেলেছি। সেসব সোর্সকে কাজে লাগিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা যেতে পারে। বেশ কয়েক বছর আগে দেশের ভৌগোলিক অবস্থানে সমুদ্রসীমা বৃদ্ধি পেয়েছিল।”
তিনি বলেন, “দেশে জ্বালানি উৎপাদন ১২ ভাগ হওয়ার পরও ৭ ভাগ সরবরাহ হচ্ছে। পাশাপাশি করা হচ্ছে আমদানি। এ ছাড়া সম্প্রতি আদানি থেকেও বিদ্যুৎ আমদানি হচ্ছে।”
সরকার বেশ কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে উল্লেখ করে মেনন বলেন, “গ্যাসক্ষেত্র বের হলেও কেন আমরা তা ব্যবহার করতে পারছি না, তা যাচাই করা প্রয়োজন। এত গ্যাসক্ষেত্র থাকার পরও গ্যাসের জন্য যেখানে মূল্য দিতে হতো ১ টাকা, সেখানে দিতে হচ্ছে ৮৩ টাকা। এ বিশাল দামের দায়ভার সাধারণ জনগণের ওপরেই পড়ছে। দেশে বিদ্যমান সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন খুব ভালোভাবেই সম্ভব।”
তিনি বলেন, “দেশে সৌরবিদ্যুৎ ও অন্যান্য খাত থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাড়ানো সম্ভব। তবে লুণ্ঠন বৃদ্ধির মনোভাবের জন্য জ্বালানি খাতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এখন ‘উৎপাদন আছে কিন্তু খাম্বা নেই’ এই পরিস্থিতিটাই দেখা যাচ্ছে।”
রাশেদ খান মেনন বলেন, “জ্বালানি খাত একটি দেশের জাতীয় সম্পদ। যে সম্পদ নিয়ে আমাদের সংসদ যে ভূমিকা পালন করার কথা, তা পালন করতে পারছে না। যেখানে সংসদে ৬২ ভাগ ব্যবসায়ী সেখানে আইন প্রয়োগ ও এসব বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করার মানুষ কম। এ ক্ষেত্রেও আলোচনা যথাযথ হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা পড়ছে।”
তিনি আরও বলেন, “সংসদে ১ ঘণ্টা আলোচনা হলে ৩ মিনিট আলোচনা হয় সাধারণ জনগণের কথা নিয়ে। বাকিটা সময় কথা হয় নিজেদের দল ও বিরোধী দলের কথা নিয়ে। সেখানে জনগণের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আরও বেশি কথা বলা উচিত।”