• ঢাকা
  • বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩০, ১১ রমজান ১৪৪৬

‘দ্রব্যমূল্য, বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে কেন আলোচনা হচ্ছে না’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৫, ১০:০০ পিএম
‘দ্রব্যমূল্য, বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে কেন আলোচনা হচ্ছে না’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “আমরা জনগণকে ঘিরে রাজনীতি করি। আজকে দেশের মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। রাজনীতিবিদরা কেনো এসব বিষয়ে বেশি বেশি ডিবেট করছে না যে, আমরা কীভাবে বাজার ব্যবস্থাপনা সাজাবো? উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো হবে? কেনো এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। জাতির সামনে এসব নিয়েও কথা বলা উচিৎ।”

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর শুটিং ক্লাবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, আমরা একজন আরেকজনের বাস্তবধর্মী সমালোচনা অবশ্যই করব। কিন্তু সমালোচনা করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে যাতে না যাই, যেখানে দেশ ও জনগণের এই ইস্যুগুলোকে চিহ্নিত করতে ভুলে যাব এবং আমাদের কাছে অন্য কিছু মুখ্য হয়ে যাবে। এটি যদি হয় তাহলে এদেশের সম্ভাবনা সব শেষ হয়ে যাবে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

রাজনীতিবিদরা যেন জনগণের দাবি থেকে সরে না আসে সে বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু আমরা গণতন্ত্র ও একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে সবাই ঐকমত্য। যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে।”

এখন সংস্কারের বিভিন্ন আলোচনা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখানে আমরা যারা রাজনৈতিক দলগুলো আছি, আমরা আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছি-ভালো একটা পরিবর্তনের জন্য। মানুষের ভোটের অধিকার ও কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। এখন বিভিন্নজন বিভিন্ন সংস্কারের কথা বলছেন। আলোচনা হচ্ছে। আমরা যেহেতু আড়াই বছর আগে প্রথম উপস্থাপন করেছি। তারপরেও আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। জাতি, মানুষ ও দেশের ভালোর জন্য যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতেই পারে।”

সংস্কার কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের বিষয়গুলো তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “এখানে আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বলতে পারি, আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনগণ এবং দেশ। এই মুহূর্তে সংস্কার নিয়ে যে আলোচনা, অবশ্যই এটি প্রয়োজন আছে। কেনো আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে থেকে আরও কিছু প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি না। যেমন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে মানুষ কত কষ্টে আছে, চিকিৎসা ব্যবস্থা, খাল খনন ও কৃষি উৎপাদান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা নিয়ে কেনো আমরা রাজনৈতিক দলগুলো এবিষয়ে আলোচনা করছি না? বিএনপি মনে করে এবিষয়গুলো জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত।”

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, সাংবিধানিক ব্যবস্থা এবং ভোটের ব্যবস্থা যেমন আলোচনা হওয়া উচিত, তারচেয়ে বেশি কিংবা সমান আলোচনা হওয়া উচিত-কীভাবে মানুষের সমস্যার সমাধান করবে। এছাড়া আমরা রাজনৈতিক দলগুলো জাতির সামনে পরিবেশ সংস্কারের ব্যাপারে কি সংস্কার উপস্থাপন করতে পারি এবং ২০ কোটি মানুষ খাবার ও ব্যবহারের পানি সরবরাহ করতে পারি-এটি কি সংস্কার প্রস্তাব হতে পারে না?”

তারেক রহমান বলেন, “মূল বিষয় হচ্ছে গণতন্ত্র, সেটি হচ্ছে একটি মানবিক বাংলাদেশ। যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সবচেয়ে বহুল আলোচিত বিষয় হচ্ছে, সংস্কার। আমরা সব রাজনৈতিক দলগুলো বিগত ১৫ বছর ধরে আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছি। এই আন্দোলন করেছি, জনগণের ডাকাতি করে নেওয়া অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। সেটাতে আমরা সফল হয়েছি।”

তারেক রহমান বলেন, “প্রায় ২০ কোটি মানুষের দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা কী হবে? বাজার ব্যবস্থা কী হবে? এসব নিয়ে কথা বলার নামও তো সংস্কার। শুধু কি নির্বাচনের সময় জাতীয় বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কথা বললেই কি সংস্কার? যাতে মানুষ মিনিমাম চিকিৎসা সুবিধা পায় সেটিও ভাবতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দিতে হলে একটি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। এ বিষয়েও ডিবেট বা কর্মপরিকল্পনা থাকা উচিত প্রত্যেকটি দলের। শিক্ষা ব্যবস্থাকে কিভাবে দেখতে চাই। সেটিও সংস্কারের অংশ।”

এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদি আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন, এবিপার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, জাগপার সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, ইউএসএ অ্যাম্বাসি প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন পলিটিক্যাল অফিসার জেমস এ স্টুয়ার্ট এবং ভারতীয় অ্যাম্বাসি প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!