শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পরিবর্তন করা হয়েছে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামে গড়ে তোলা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অর্ধশতাধিক স্থাপনার নাম। ভেঙে ফেলা হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি, যা ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার অসংখ্য ভাস্কর্য ও মুরাল। যদিও এখনো দেশের সব কটি নোট ও স্মারক মুদ্রায় শোভা পাচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ১৯ মার্চ বাজারে নতুন নোট ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৫, ২০ ও ৫০ টাকার এসব নতুন নোটেও থাকছে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। ছোট এসব নোটের পাশাপাশি বাজারে ছাড়া ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নতুন নোটও বিদ্যমান ডিজাইনের বলে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান অবশ্য বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে এ মুহূর্তে বিপুল পরিমাণ ছাপানো নোট রয়েছে। ছাপানো এ নোটগুলো বাতিল করলে বিপুল অংকের অর্থের অপচয় হয়। আমরা এ অপচয় করতে চাচ্ছি না। এজন্য আগে ছাপানো নোটগুলোই ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাজারে ছাড়া হবে।’
টাকার নতুন ডিজাইন সম্পর্কে আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘নতুন নোটের ডিজাইন চূড়ান্ত হয়েছে। আশা করছি, আগামী এপ্রিল-মে নাগাদ সেই নোট বাজারে আসবে। ধীরে ধীরে বাজার থেকে পুরনো নোট তুলে নেওয়া হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইস্যুকৃত নোট ছিল ৩ লাখ ১ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকার। এর মধ্যে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকাই ছিল ব্যাংক খাতের বাইরে। ব্যাংকে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ ছিল মাত্র ২৪ হাজার ৩১৭ কোটি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইস্যুকৃত নোটের বড় অংশই অবৈধ অর্থে (অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা) রূপান্তর হয়ে ‘সিন্দুকে’ আটকা পড়েছে বলে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন থেকে দাবি করে আসছেন।
দেশের অর্থনীতির চাহিদার নিরিখে মুদ্রা ইস্যু করে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার। বাংলাদেশে সরকারি মুদ্রা হলো ১, ২ ও ৫ টাকার নোট ও কয়েন। সরকারের ইস্যুকৃত এ ধরনের মুদ্রা রয়েছে ১ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকার। তবে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির চাপে সরকারি মুদ্রা এরই মধ্যে বাজারে উপযোগিতা হারিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইস্যুকৃত ও গভর্নরের স্বাক্ষরযুক্ত নোট ‘ব্যাংক নোট’ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ ব্যাংক নোট হলো ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার কাগুজে মুদ্রা।