• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজটি বন্ধু গোপালকে কে পাঠাল


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৪, ০২:২৫ পিএম
হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজটি বন্ধু গোপালকে কে পাঠাল
আনোয়ারুল আজীম। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। এই নৃশংস খুনের ঘটনার তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এ হত্যাকাণ্ডে প্রথম থেকেই আজীমের মোবাইলের শেষ টাওয়ার ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছিল।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের এক খবরে বলা হয়, শেষবার আনারের ফোনের লোকেশন ছিল উত্তর প্রদেশ। খুনের পর সবাইকে বিভ্রান্ত করতেই তার মোবাইলটি উত্তর প্রদেশে নিয়ে যাওয়া হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ। এর সঙ্গে এবার প্রকাশ্যে এসেছে আজীমের শেষ হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ।

১২ মে কলকাতায় এসেছিলেন আনোয়ারুল আজীম। উঠেছিলেন বরানগরে পুরোনো বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। ‘বিশেষ কাজে দিল্লি পৌঁছলাম। আমাকে তোমাদের ফোন করার দরকার নেই। আমিই ফোন করে নেব।’ গোপাল বিশ্বাস, নিজের মেয়ে ও ব্যক্তিগত সহকারী একসঙ্গে হোয়াটসঅ‌্যাপে এই মেসেজ পাঠিয়েছিলেন আনার। আর এই মেসেজ ও মোবাইলের শেষ টাওয়ার ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে রহস‌্য।

শিলাস্তির ভূমিকা

গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এমপি আনারকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ খুনির সঙ্গে এক একজন নারীও ছিল। সিলিস্তা রহমান নামের ওই তরুণী আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী। দুই মাস আগেও সিলিস্তাকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছিলেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। সিলিস্তাকে দিয়েই হানি ট্র্যাপে ফেলে এমপি আনারকে সঞ্জিভা গার্ডেনের ওই বাসায় নিয়ে যান। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দারা জানান, সিলিস্তা এই খুনের ঘটনা আগে থেকেই জানতো কিনা তা জানার জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সিলিস্তা অনেক চতুর। সে খুনের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করছে। কিন্তু একই ফ্ল্যাটে একজন মানুষকে হত্যার পর কেটে টুকরা টুকরা করার ঘটনাটি তার অজানা থাকার কথা নয়। কারণ এমপি আনারকে হত্যার পর চাপাতি দিয়ে হাড়গুলো কেটে আলাদা আলাদা করা হয়। হাড় কাটার শব্দও তার শোনার কথা।

ঘটনাপ্রবাহ

গত ১২ মে চিকিৎসার কথা বলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। সেদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন তিনি। পরের দিন ১৩ মে ‘বিশেষ প্রয়োজনের’ কথা বলে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনার। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলেও জানান তিনি। বিধান পার্কের কাছে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন তিনি।

চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় আজিমের ফোন থেকে গোপালের কাছে মেসেজ আসে, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে বন্ধু গোপালকে ফোন না দেওয়ার জন্য সতর্ক করেছিলেন।

গত ১৫ মে আবার আনারের নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় গোপালকে জানানো হয়, তিনি দিল্লি পৌঁছেছেন এবং ভিআইপিদের সঙ্গে আছেন। তাকে ফোন করার দরকার নেই। একই বার্তা পাঠান বাংলাদেশে তার ব্যক্তিগত সহকারী রউফের কাছেও।

১৭ মে আনারের পরিবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গোপালকে ফোন করেন। ওই সময় তারা গোপালকে জানান, তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিনই ঢাকায় থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর আর এমপি আনারের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

২০ মে এমপি আনারের খোঁজ করতে গিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে। তারা জানতে পারে, কলকাতায় বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার মোবাইলের লোকেশন একবার পাওয়া গিয়েছিল সেখানকার নিউমার্কেট এলাকায়। এরপর ১৭ মে তার ফোন কিছুক্ষণের জন্য সচল ছিল বিহারে।

পরে বুধবার (২২ মে) ভারতের সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্লাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে।

Link copied!