সোমালীয় জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ বাংলাদেশি নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারের বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মালিকপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। খুব শিগগির নাবিকদের উদ্ধার করা যাবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে পর কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মিজানুল ইসলাম বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, আমাদের (জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ) সঙ্গে দর কষাকষি করে মুক্তিপণ চূড়ান্ত হয়েছে, এমন খবর প্রচার হচ্ছে। তবে এমন কোনো বিষয় আমার জানা নেই। যেহেতু মালিকপক্ষের হয়ে আমি গণমাধ্যমে কথা বলছি, তাই দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমি এমন কিছু জানায়নি।”
মিজানুল বলেন, “জলদস্যুরা যে তৃতীয় পক্ষ নিয়োগ করেছে, তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তবে এখনো তারা মুক্তিপণের বিষয়টি সামনে আনেনি। তবে আমরা এমন কিছু হতে পারে ধরে নিয়ে অগ্রিম কিছু পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছি।”
কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা জানান, ১৩ বছর আগে এমভি জাহান মনিকে যেভাবে দস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করা হয়েছিল, সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই তারা এগোচ্ছেন। নাবিকরা মুক্তি পেলে তাদের বিমানযোগে দেশে আনা হবে। এছাড়া জাহাজ ফিরিয়ে আনার জন্য অপর একটি দলকে পাঠানো হবে, সেটিও ঠিক করে রাখা হয়েছে।
মিজানুল আরও বলেন, “আমরা আমাদের পূর্ব-অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্দেশনা অনুসারে কাজ করছি। অনেকের মতো আমরাও আশা করছি, ঈদের আগে নাবিকদের ফিরিয়ে আনা যাবে। তবে এটা সম্পূর্ণ জলদস্যুদের হাতে, ওরা না চাইলে আমরা নিজের থেকে কিছু করতে পারব না। ঠিক কার সঙ্গে কোথায়, আলোচনা হয়েছে বা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট করে এ মুহূর্তে বলা ঠিক হবে না। তবে আন্তর্জাতিক পরিসরে অনেকের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।”
তিনি জানান, বিমাকারী প্রতিষ্ঠান প্রোটেকশন অ্যান্ড ইনডেমনিটি (পিঅ্যান্ডআই) এবং ক্রাইসিস টোয়েন্টিফোর জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে কাজ করছে।
১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সে সময় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে ৫৭০ ন্যাটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। দস্যুদের কাছে জিম্মি হয় ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু।
জিম্মি জাহাজটি এখন সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড প্রদেশের নুগাল অঞ্চলের জিফল উপকূলের দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে। অদূরেই মোতায়েন করা আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্সের (ইইউএনএভিএফওআর) আটলান্টা অপারেশনের একটি যুদ্ধজাহাজ। তবে যে কোনো ধরনের অভিযান থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তারা সেপথে এগোয়নি।