রিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ বেইজিংয়ের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেছেন, “আগামী ৮ জুলাই চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে নতুন ঘোষণা আসতে পারে।”
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কূটনীতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাব আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের চীন সফরে দুই দেশের কৌশলগত উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, “আমাদের সম্পর্কের একটি কমন জায়গা রয়েছে। তা হলো, আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও চীনের দৃষ্টিভঙ্গি একই। বাংলাদেশকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে দেখে চীন। এ ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন চলতে থাকলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় হবে ৪ হাজার ডলার।”
ইয়াও ওয়েন বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে এ দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কৃষি সহযোগিতা, ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট, ডিজিটাল ইকোনোমি, শিক্ষা, গণমাধ্যমের সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া দুই দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে। আবার রোহিঙ্গা সংকট আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পাবে।”
আলোচনা সভায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, “এ নদী বাংলাদেশের। অতএব তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা সম্মান করব। তিস্তা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা। আমরা এখনো বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।”
তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চীন রাজি আছে জানিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমরা সেটা সম্পন্ন করি। যে পক্ষই এ প্রকল্পে কাজ করুক, দ্রুত শেষ হোক সেটা আমরা চাই। উত্তরের সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক, সেটাও আমরা চাই। আর তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি আছে চীন।”
এদিকে রিজার্ভে চাপ কমাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে তাদের শর্তানুযায়ী ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ বাংলাদেশের জন্য ঋণের তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে এই অর্থ যুক্ত হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর গত ডিসেম্বরে পেয়েছিল দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। এখন তৃতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের ফলে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। ঋণের বাকি প্রায় ২৩৯ কোটি ডলার। যা চারও কিস্তিতে পাওয়া যাবে।