কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশ রেলওয়েকে দায়ী করছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা। একই সঙ্গে তারা রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের পদত্যাগ এবং দায়ী কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বেসরাকারি এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেলমন্ত্রী রেলওয়ের লোকোমাস্টারের সিগনাল অমান্য করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, “আমার লোকোমোটিভ মাস্টারের জন্য দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য দায় তো অবশ্যই আছে। এই দুর্ঘটনা তো আর বলে কয়ে আসে না। সাধারণত দুর্ঘটনাগুলোতে আমরা যা করি, মৃত্যুর তো আর কোনো ক্ষতিপূরণ হয় না। তারপরও আমরা চেষ্টা করব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যতটুকু সহায়তা করতে পারি। এছাড়া যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করব রেলের পক্ষ থেকে।”
এসময় যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “পদত্যাগ করলে যদি সমস্যার সমাধান হয়, তাহলে সেটার তো কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কথা হচ্ছে, এখানে রেলমন্ত্রীর কতটা দায় আছে, সেটা দেখতে হবে। তবে আমার বিরোধীপক্ষ যারা আছে, তারা তো প্রতিনিয়তই আমার পদত্যাগ চায়। কারা দাবি করছে পদত্যাগ সেটাও দেখতে হবে।”
কমলাপুর রেলস্টেশনে ইঞ্জিন ঘোরানোর যন্ত্র (টার্ন টেবিল) নষ্ট। ফলে ইঞ্জিনের দূরতম অংশ থেকে ট্রেন চালাতে হচ্ছে লোকোমাস্টারদের। দুর্ঘটনার আশঙ্কা করে লোকোমাস্টারদের পক্ষে দুই দিন আগে একটা চিঠি পাঠানো হয়েছে।
কমলাপুরের টার্ন টেবিল নষ্টের দায় কার, এ প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, “আমরা একটা তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। তারা যথাযথভাবে যাচাই করবে কারা দায়ী। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা যা বুঝতে পেরেছি, সেভাবেই আমরা কথা বলছি। কিন্তু এটা তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর বোঝা যাবে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সঠিক কথা আমরা বলতে পারছি না।”
এর আগে ভৈরবে রেল দুর্ঘটনার দায় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, “রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই। দায়-দায়িত্ব তাকে বহন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী তাকে সরিয়ে দেবেন আর রেলওয়ের যারা দায়ী তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। রেলে মেগা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে কিন্তু রেলপথ সংস্কার কিংবা সিগনালিং সিস্টেম আধুনিকীকরণে তাদের মনোযোগ নেই।”