• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহার নিয়ে যা বললেন র‌্যাবের মুখপাত্র


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৪, ০৩:০৭ পিএম
‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহার নিয়ে যা বললেন র‌্যাবের মুখপাত্র

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের সময় থেকে র‍্যাবের একজন সদস্যও ‘আত্মগোপনে নেই’ বলে জানিয়েছেন এ বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। ছাত্র-জনতার ওই আন্দোলনে র‍্যাব কোনো ধরনের ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি’ বলেও দাবি করেছেন তিনি।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, “৫ অগাস্ট পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে র‌্যাবের কোনো সদস্যই পালিয়ে যায়নি, কর্মবিরতিতেও যায়নি।”

রোববার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মুনীম ফেরদৌস বলেন, “আপনারা জানেন, র‌্যাব একটি কম্পোজিট ফোর্স। এখানে প্রায় ৮টা বাহিনী থেকে আমাদের সদস্যরা আসেন। এরমধ্যে প্রায় ৪৪ শতাংশ আসেন পুলিশ থেকে। এখানে সবচেয়ে বড় অংশটাই পুলিশের। অলমোস্ট ৫০ ভাগের কাছাকাছি, অর্ধেক। র‌্যাব কিন্তু ছোট একটা বাহিনী। ১০ হাজার প্লাস-মাইনাস একটা ফোর্স। এই ১০ হাজার ফোর্সের মধ্যে ৪৪ ভাগ পুলিশ।

আমরা প্রথম থেকে যেভাবে একসাথে ছিলাম, আমরা শেষ পর্যন্ত একসাথে ছিলাম। এখানে অনেকের অনেক ধরনের সমস্যা ছিল, কিন্তু আমাদের র‌্যাব ফোর্সেসে কখনোই কোনো সমস্যা হয় নাই।”

র‍্যাব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে ‘ছিল’ দাবি করে ফেরদৌস বলেন, ”এর আগেও আমি বলেছি, ছাত্র-জনতার ওপরে র‌্যাবের কোন সদস্য লিথ্যাল উইপন (প্রাণঘাতি অস্ত্র) ব্যবহার করেনি। সেইভাবে সাধারণ ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন ছিল, সেটার সাথে আমরা ছিলাম, সেটার সাথে আমরা আছি।“

গণঅভ্যুত্থান সফল করতেও ‘করণীয় সব কিছুই করা হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস।

গত ১৮ জুলাই কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে সংঘর্ষ ও পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির পরদিন র‌্যাবের হেলিকপ্টার আকাশে উড়তে দেখা যায়। আকাশ থেকে আন্দোলনকারীদেরকে গুলি করা হয়েছে, এমন অভিযোগ ওঠে।

সে সময়ের আওয়ামী লীগ সরকার বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে র‌্যাবও ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে।

‘প্রতিদিনই রাঘব বোয়ালদের ধরছি’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের মুখপাত্র ফোরদৌস বলেন, “বড় পর্যায়ের ৩৯ জন নেতাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। যারা মামলার এক-দুই নাম্বার আসামি। প্রতিদিনই রাঘব বোয়ালদের ধরছি। সবমিলিয়ে ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা ১ হাজার ১৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি।“

অভিযানে এখন পর্যন্ত ২১৯টি অস্ত্র ও ১০ হাজার ৬৪২ রাউন্ড গুলি উদ্ধারের কথা জানিয়ে ফেরদৌস বলেন, “আমাদের এই কার্যক্রম চলমান আছে।”

অপহৃত শিশু উদ্ধার

সংবাদ সম্মলনে ঢাকার সদরঘাট থেকে অপহৃত প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নূর তুষারকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে উদ্ধারের কথা জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার আমরাগাছি হোগলপাতি এলাকা থেকে তুষারকে র‍্যাব উদ্ধার করে।

ফেরদৌস বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সদরঘাটের সোয়ারীঘাট এলাকা থেকে আট বছর বয়সী তুষারকে অপহরণ করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, “তুষারের মায়ের সঙ্গে অপহরণকারী বাদল ওরফে হৃদয় নামের এক তরুণের পরিচয় হয় মোবাইল ফোনে। পরিচয়ের সুবাদে ঘটনার দিন তুষারকে নিয়ে তার মা সোয়ারীঘাট এলাকায় বাদলের সঙ্গে দেখা করতে যান। ওই সময় চিপস কিনে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তুষারকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাদল।“

এরপর তুষারের মা ঢাকার কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। গত বুধবার এক ব্যক্তি তুষারের মাকে ফোন করে ছেলের জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। ওই ফোনের পর তুষারের বাবা থানায় মামলা করেন।

ফেরদৌস জানান, অভিযানের সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়, তবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Link copied!