একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা পদত্যাগপত্র জমা দিতে সংসদে এসেছেন।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে পদত্যাগপত্র জমা দিতে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা দিয়ে প্রবেশ করেন তারা।
এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে দলের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে তাদের পদত্যাগের কথা জানানো হয়।
বিএনপির ৭ এমপির মধ্যে পাঁচজন সংসদে এসেছেন। বাকি দুইজনের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আবদুস সাত্তার গুরুতর অসুস্থ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুন অর রশিদ দেশের বাইরে থাকার কারণে আসতে পারেননি। তবে, তারা পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে হুইপ রুমিন ফারহানার মাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
সংসদে প্রবেশকালে রুমিন ফারহানা সাংবাদিকদের বলেন, “শনিবারের জনসমাবেশ থেকে দশটি গাইডলাইন আমাদের দেওয়া হয়েছে। প্রথম গাইডলাইন ছিল সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং সংসদ থেকে পদত্যাগ করা। বলা হয়েছে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেওয়ার কথা। এই সংসদ ভেঙে দেওয়ার যে দাবি আমাদের দলের সেই দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আমাদের সাতজন সংসদ সদস্য সংসদ থেকে পদত্যাগ করছেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, “আজকে স্পিকার মহোদয়ের হাতে আমরা পদত্যাগপত্র তুলে দেব। শনিবার আমরা ইমেইলের মাধ্যমে এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে স্পিকারকে জানিয়েছি আমরা সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেছি। জবাবে তিনি বলেছেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।”
রুমিন ফারহানা আরও বলেন, “এই সংসদে আমরা যতটুকু সুযোগ পেয়েছি জনগণের কথা ও দেশের কথা বলার চেষ্টা করেছি। আমাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সময়-সুযোগ কম ছিল। তারপরও সর্বোচ্চ করার চেষ্টা করেছি। এখন বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করছি।”
আপনাদের পদত্যাগে কোনো সংকট তৈরি হবে কী- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সংসদে সত্যিকারের বিরোধী দল বলতে যদি কিছু বুঝায় তা হলো বিএনপি। এ কথা সরকার ও জনগণ জানে।”
সংসদে আসা কি ভুল ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “একবারে ভুল ছিল না। আমরা বলেছিলাম যে সীমিত সুযোগ পাব তার সৎ ব্যবহার করব। বিগত দিনগুলোতে তা করেছি। সময়-সুযোগ পেলে আরও করতাম।”
একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত বিএনপির সাত সদস্যরা হলেন—
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আবদুস সাত্তার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুন-অর-রশিদ, বগুড়া-৬ আসনের গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমান জাহিদ ও সংরক্ষিত নারী আসনের ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট থেকে আটজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে বিএনপির ছয়জন এবং গণফোরামের দুইজন।
বিএনপির ছয়জনের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ছিলেন। তবে তিনি নির্ধারিত সময়ে শপথ না নেওয়ায় তার আসনে উপনির্বাচন হয় এবং সেখানে বিএনপির আরেক প্রার্থী জয়ী হন। এরপর সংরক্ষিত আসন থেকে রুমিন ফারহানা এমপি হলে বিএনপির সংসদ সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় সাতজনে।