বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির দাবির মুখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এখন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত হলো।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এদিকে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার পর এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি- এই সরকারেরই আইনগত, গণতান্ত্রিক ও নৈতিক বৈধতা নেই। যাদের নিজেদেরই বৈধতা নেই, তাদের এই হাস্যকর কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চিন্তিত নয়।”
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, “এই সরকারের হাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী এবং পুলিশের রক্তের দাগ লেগে রয়েছে। নিজেদের গণহত্যার দায় আমাদের ওপরে চাপানোর জন্যেই এই সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছে।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনের বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করিয়া বিগত ১৫ বৎসরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুম কেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এই সম্পর্কিত প্রামান্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হইয়াছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হইয়াছে।
এতে বলা হয়, যেহেতু ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ হইতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে এবং যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসাবে তালিকাভুক্ত করল। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।