মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে ১০-১২ জন্য অমুক্তিযোদ্ধা স্বেচ্ছায় আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
এর আগে গত ডিসেম্বরে মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা বলেছিলেন, কোনো অমুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে স্বেচ্ছায় নিজেকে সরিয়ে নিলে তাকে ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) দেওয়া হতে পারে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অমুক্তিযোদ্ধারা নাম প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানান উপদেষ্টা।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৯২তম সভায় যেসব অমুক্তিযোদ্ধা স্বেচ্ছায় গেজেট ও সনদ বাতিল করতে ইচ্ছুক তাদের এ বছরের ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে পরে সেই সিদ্ধান্ত আর বাস্তবায়ন করা হয়নি।
বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে ফারুক-ই-আজম বলেন, “২৬ মার্চের কথা আমরা আলোচনা করেছি, কিন্তু সময় নির্ধারণ করে দিইনি। এটার একটা সুনির্দিষ্ট তারিখ আমরা দিয়ে দেব যে এত তারিখের ভেতর যদি তারা চলে যান তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। আমি মনে করছি, এই সুযোগটা দিলে অনেকেই (অমুক্তিযোদ্ধা) সরে যাবেন।”
জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনকালে ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৯০টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় সভাগুলোতে ১৮ হাজার ১৬৮ জনকে নতুন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। একই সময়ে পাঁচ হাজার ৯৮৭ জন অমুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের সুপারিশও করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারের কাছ থেকে সনদ নিয়েছেন, এমন অন্তত ১২ ব্যক্তি সনদ ফিরিয়ে দিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে অবসরে যাওয়া এক ব্যক্তি। এক ব্যক্তি তার আবেদনে সনদ নেওয়া ভুল হয়েছে বলে উল্লেখ করে করেছেন। দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন কেউ কেউ।
তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সনদ ফেরত দিতে আবেদন করা ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা আবেদন করেছেন, নাম প্রকাশ করলে তারা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হবেন। এ কারণে তাদের নাম গোপন রাখা হচ্ছে।