অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চায়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দ্য হিন্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বিএনপি বলেছে, সব রাজনৈতিক দল অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সুতরাং তারা ইতোমধ্যে রায় দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামতকে উপেক্ষা করব না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে দেওয়া বিবৃতির কথা তুলে ধরে সাংবাদিক প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান, নতুন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সময় আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত থাকার বিষয়ে তিনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে কোনো বিবৃতি দেননি।” তখন ভারতের গণমাধ্যমের সাংবাদিক বলেন, “তিনি দিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে।” জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “ভালো। এখন বাংলাদেশ ও সংখ্যালঘুদের বিষয়ে বলি। সম্ভবত তিনি সঠিকভাবে অবগত নন। এটা অপপ্রচার, যা বিশ্বজুড়ে চলছে। কিন্তু যখন তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বাস্তবতা সম্পর্কে জানবেন, তখন ট্রাম্প অবাক হবেন যে, তাকে কতটা ভিন্নভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানানো হয়েছে।”
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “তাকে ফিরিয়ে আনতে আমরা সব আইনি পথ অবলম্বন করব।” এ সময় সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, “প্রকৃতপক্ষে এখনো আপনার সরকার (শেখ হাসিনার) প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানায়নি। (ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে) একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে।’ জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “আমি মনে করি, কিছু আইনি ধাপ রয়েছে। আমরা সেগুলোর দিকে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা এখনও ওই পর্যায়ে পৌঁছাইনি।”
‘হিন্দু’র সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিচার করা হচ্ছে– এমন যুক্তি দেখিয়ে ভারত যদি (বাংলাদেশের) অনুরোধ না রাখে, তাহলে কী হবে?’ জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “আপনি কি বলছেন, ভারত চুক্তি লঙ্ঘন করবে? হ্যাঁ, চুক্তিতে এমন কিছু ধারা রয়েছে। কিন্তু ভারত সরকার যদি শেখ হাসিনাকে সেখানে রাখতে এগুলো প্রয়োগ করে, তাহলে সেটা আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবে না। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ খুব কম। তাই এ সময়ে হয়তো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সবকিছু মীমাংসা করা যাবে না। তবে আমাদের পরে যে সরকারই আসুক না কেন, তারা এটা ক্ষমা করবে না।”