ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে সিএস দাগ অনুযায়ী খালের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বুধবার (৭ জুন) রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর খাল সংলগ্ন লিংক রোডের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, “ঢাকার খালগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে। আগে খালগুলো সিএস দাগ অনুযায়ী অনেক চওড়া ছিল। বর্তমানে মহানগর জরিপে খালগুলো ছোট হয়ে গেছে। ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে মহানগর জরিপ নয়, সিএস দাগ অনুযায়ী খালের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। এটি আমার দাবি, কাউন্সিলরদের দাবি। আমি জনগণকে আহ্বান করছি আসুন আমরা সিএস দাগ অনুযায়ী খালগুলো উদ্ধার করি। সরকারের কাছে দাবি নদীর সীমানা যদি সিএস দাগ অনুযায়ী হয় খালের সীমানাও সিএস দাগ অনুযায়ী হতে হবে। সিএস দাগ অনুযায়ী যেখানে ১১০ফিট চওড়া খাল ছিল মহানগর জরিপে সেটি ১০ফিট হয়ে গেছে। কতিপয় অসাধু লোকজন বাকি ১০০ফিট দখল করে ফেলেছে।”
আতিকুল ইসলাম বলেন, “খাল এভাবে দখল হওয়ায় নগরের পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। খালে নৌকা চলাচল করতে পারে না। দখল হওয়ায় খালে পানি নেই। গাছ কেটে মাঠ দখল করে ভবন বানিয়ে পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। পরিবেশ এখন প্রতিশোধ নিচ্ছে। ন্যাচারবেজ সলিউশনের জন্য খাল উদ্ধার করতে হবে। মাঠ দখলমুক্ত করতে হবে। গাছ লাগাতে হবে। পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ যারা ধ্বংস করবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
রূপনগর খালে নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, “আগামী এক বছরের মধ্যে রূপনগর খালের ৬টি ব্রিজ উঁচু করে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করে নৌ চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। খালের পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। শিশুদের জন্য খালের পাড়ে ছোট ছোট পার্কও করে দেওয়া হবে। মিরপুরে ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এর পুরনো অফিসে ওয়ার্ড কমপ্লেক্স করে দেওয়া হবে। ওয়ার্ড কমপ্লেক্সে একই ভবনে সব সেবা পাবে জনগণ।”
জনগণকে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, “উন্নয়ন কাজের জন্য অর্থের প্রয়োজন। তাই অনুরোধ করছি আপনারা নিয়মিত ট্যাক্স পরিশোধ করুন। তবে ট্যাক্স দিতে এখন আর সিটি করপোরেশনে যেতে হবে না। ঘরে বসে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করুন।”
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম যে ওয়ার্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করবে সেই ওয়ার্ডকে পুরস্কৃত করব। পুরস্কার স্বরুপ রূপনগর খালের লিংক রোডের উন্নয়ন কাজের জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে, তার প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় প্রতিটি ওয়ার্ডে উন্নয়ন কাজ করা হবে। আজকে থেকে এই রোডের কাজ শুরু হয়ে ডিসেম্বরে সমাপ্ত হবে। আপনারা এলাকাবাসী এই কাজে সহযোগিতা করবেন, তদারকি করবেন। ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করছে কি না সেটি খেয়াল রাখবেন।”
এ সময় ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী জিয়াউল বাসেত, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জামাল মোস্তফা, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. তাইজুল ইসলাম চৌধুরী (বাপ্পি) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।