টানা তাপপ্রবাহে পুড়ছে রাজধানীসহ সারা দেশে। সহসাই বৃষ্টির সুখবর নেই। প্রচণ্ড গরম থেকে স্বস্তি পেতে তরমুজ ও বাঙ্গির মতো রসালো ফলের দিকে ঝুঁকছেন সাধারণ মানুষ। এতে চাহিদা বেড়েছে এই দুই ফলের। আর এই সুযোগে তরমুজ ও বাঙ্গির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাইজ ভেদে প্রতি পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে দেড়শ টাকা থেকে সাড়ে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত। কিছুদিন আগেও যে তরমুজ দেড়শ টাকা বিক্রি হয়েছে, সে একই তরমুজ এখন বাজারে ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হামিম নামের এক ক্রেতা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ফেসবুকে তরমুজ বয়কটের ডাক দেওয়া পর দাম অনেক কমে যায়। তখন মানুষ তরমুজ কিনে শান্তি পেয়েছিল। তবে এখন গরমে পানির চাহিদা পূরণ করার জন্য যখন তরমুজ বেশি বেশি করে কিনছেন, তখন ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ তরমুজ থাকলেও সংকট তৈরি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা।”
কাউসার নামের এক ক্রেতা বলেন, “দুই সপ্তাহ ধরে গরম চলমান। এই গরম আরও কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে বলে শুনেছি। তাই গরমে তরমুজ কিনতে এসেছি। তরমুজ খেলে পানি পিপাসা কম লাগে। তবে এসে দাম শুনে ঘাবড়ে গিয়েছি। প্রতি পিস ছোট তরমুজ কিছুদিন আগে কিনতাম আশি টাকা করে। কিন্তু একই তরমুজ এখন কিনলাম দেড়শ টাকায়।”
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, তরমুজের মৌসুম শেষ দিকে এসে গেছে। কৃষকের জমিতে এখন আর বেশি ফল নেই। যার ফলে বাজারে তরমুজের সরবরাহ কম। আবার পরিবহন খরচ বেড়েছে। আগে একশ তরমুজ কেনা যেত আঠারো থেকে উনিশ হাজার টাকায়। আর এখন সেটা কিনতে হয় পঁচিশ থেকে ছাব্বিশ হাজার টাকায়।”
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী হেলাল সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “তরমুজের মৌসুম এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। যার ফলে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। আবার পরিবহন খরচও বেড়েছে। তাই তরমুজের দামও বেড়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “তিন কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে দুইশ থেকে দুইশ বিশ টাকায়। আর চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে তিনশ পঞ্চাশ থেকে চারশ টাকায়। আবারও কেউ ছয় কেজি ওজনের বড় তরমুজ সাড়ে পাঁচশ টাকাতেও বিক্রি করছে। তবে বাজারে এখন দেড়শ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই।”
শুধু তরমুজ নয়, গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বাজারে বাঙ্গিও কেজিতে ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকা বেড়েছে। কয়েকদিন আগেও যে বাঙ্গি আশি থেকে একশ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে একই বাঙ্গি এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়।
সাজু নামের এক ব্যবসায়ী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বাজারে বাঙ্গির সরবরাহ কম। মৌসুমি অনেক ফল এখন সিজন শেষ হওয়ার পথে। তাই ঢাকায় ফল কম আসায় দাম বাড়ছে। এই গরমে মানুষ বাঙ্গি বেশি বেশি কেনার কারণে অনেক ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।”