যানজটকে সঙ্গী করেই দিন শুরু হয় রাজধানীবাসীর। গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় হাতে রাখা সময়ে অনেক পরে। এমন দুর্ভোগের পাশাপাশি মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র দাবদাহ। ফলে নগরীর বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কয়েকগুণ বেড়েছে। নগরবাসীর অভিযোগ, এমন দুর্ভোগের জন্য দায়ী বাস চালকদের অতিরিক্ত যাত্রীর চাহিদা।
রোববার (৫ মে) সরেজমিনে রাজধানীর বাংলামটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, গুলিস্তান এলাকা ঘুরে তীব্র যানজটের চিত্র দেখা গেছে। বাসের যাত্রীদের চোখে মুখে দেখা গেছে বিরক্তির ছাপ। তীব্র গরম থেকে বাঁচতে অনেকেই সঙ্গে নিয়েছে ছোট ছোট চার্জার ফ্যান। তৃষ্ণা মেটাতে অনেকে পানির বোতল কিনছেন।
তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় বাসযাত্রীর সংখ্যা কম চোখে পড়েছে। বাস হেলপাররা গলা ফাটিয়ে ডাকলেও অনেক যাত্রী সাড়া দিচ্ছেন না। দীর্ঘক্ষণ বাস যাত্রীর আশায় থেমে থাকলে চালক ও হেলপারদের সঙ্গে বিতণ্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন গন্তব্যে পৌঁছা নিয়ে উদ্বিগ্ন যাত্রীরা।
শরিফুল ইসলাম নামের একজন বাসে উঠেছেন মিরপুর থেকে। গুলিস্তানের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন তানজিল পরিবহনে। বাসের সিটে বসে বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “যানজটে এমনিতে বিরক্ত লাগে। এর ওপর আবার গরমে বাসে থাকাই দায়। ফার্মগেট থেকে বাংলামটর পর্যন্ত ৫ মিনিটের পথ আসতে লেগেছে ৩০ মিনিট। অনেক কষ্ট হচ্ছে বাসে যেতে।”
জসিম উদ্দিন নামের আরেক যাত্রী বললেন, “যানজট তো সমস্যাই। তার ওপরে বেশি ভোগান্তিতে ফেলেছে গরম। বাস চালকরা বেশি বেশি যাত্রী নিতে চায়। তখন আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ওদের জন্যই বেশি যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তারা কখনও বেপরোয়া চালায়। কখনও যাত্রীর জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে।”
ঢাকা ন্যাশনাল পলিটেকনিকের ছাত্র মাহাফুজ বলেন, “যানজটের কারণে প্রতিদিন ৪০ মিনিট আগে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। যদি আগে না বের হই, তবে ক্লাস ধরতে পারি না। গরমের কারণে যন্ত্রণা তো বেড়েছে। রোদ-গরমে টেকা যাচ্ছে না।”
মোটরসাইকেলের যাত্রী গোলাম শাহরিয়ার বলেন, “বাইক নিয়েছি দ্রুত যাওয়ার জন্য। কিন্তু দ্রুত তো যাওয়া যায় না যানজটের কারণে। বাইকের ছাদ নাই, রোগে সেই দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। গরমের যন্ত্রণা কমলেও যানজটের যন্ত্রণা কমবে না।”