মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর বর্তমানে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির শেষ দিন ছিল রোববার (৩০ জুন)। সোমবার (১ জুলাই) সরকারের বিশেষ আদেশে অব্যাহতির সময়সীমা পার হওয়ায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর হওয়ায় ছিল। তবে এখন পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। ফলে আগের ভাড়াতেই মেট্রোরেল যাতায়াত করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
সোমবার কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশনে দেখা যায়, আগের নির্ধারিত ভাড়াতেই সবাই যাতায়াত করছেন। কিন্তু এরসঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট যুক্ত হলে ভাড়া বাড়বে, এমন তথ্য মানুষের মাঝে বেশ আলোচনায়। আবার অনেকেই ভাড়া বাড়বে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সংবাদ প্রকাশকে জানায়, ভ্যাট বাড়লে ভাড়া কমবে। কিন্তু ভাড়ায় যে টাকা কমবে, তার সঙ্গে এনবিআরের ভ্যাট যুক্ত করে আগের ভাড়াই কার্যকর থাকবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী টিকিট কাউন্টারকর্মী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এনবিআরের পক্ষ থেকে ভ্যাট বাড়ার যে প্রসঙ্গ আসছে, সেটি আজ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে সেটি কার্যকর হয়নি। কবে নাগাদ কার্যকর হবে, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়নি। টিকিটের মূল্যের সঙ্গে এনবিআরের ভ্যাট কার্যকর হলে ভাড়া কমবে। ভাড়ায় যে টাকা কমবে তার সঙ্গে এনবিআরের ভ্যাটের টাকা যুক্ত হবে। এমন একটি তথ্য আমরা শুনতে পেরেছি। এখনই এই বিষয়ে পুরোপুরি বলা যাচ্ছে না। সামনে দেখা যাক, কী হয়।”
টিকিট মেশিন অপারেটর মো. হাফিজুর রহমান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সরকার ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা করলেও আজকে কোনো ভাড়া বাড়েনি। আগের ভাড়াতেই যাতায়াত করছেন সাধারণ যাত্রীরা।”
এর আগে, গত ৪ এপ্রিল ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডকে (ডিএমটিসিএল) চিঠি দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানায়, জুলাই থেকে মেট্রোরেলের সেবা ও টিকিটে মূসক পরিশোধ করতে হবে। এরপর ডিএমটিসিএলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন মেট্রোরেলে ভ্যাট না বসানোর অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে মেট্রোরেলের পরিচালনা সংস্থা ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ভ্যাট না বসানোর জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় এনবিআরকে দিয়েছে, এখন আমরা এর (চিঠি) জবাবের অপেক্ষা করছি।”
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে যাত্রীদের কথা চিন্তা করে মেট্রোরেলের ভাড়ায় ভ্যাট অব্যাহতি দেয় এনবিআর। মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর বর্তমানে ভ্যাট মওকুফ রয়েছে, যার সময়সীমা ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। এরপর ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করে ডিএমটিসিএল। তবে আবেদনের বিপরীতে নাকচ করেছে এনবিআর।
ডিএমটিসিএলের চিঠির জবাবে এনবিআর জানায়, উন্নয়নের চাহিদা অনুযায়ী, রাজস্ব আয় বাড়াতে সব খাতেই কর ছাড় কমানো হচ্ছে। তাই এ খাতের ভ্যাট অব্যাহতি বাড়ানো হবে না।