ছোট-বড় সব বয়সী নারীদের নিত্য ব্যবহার্য অনন্য প্রসাধনী পণ্য লিপস্টিক। দেশের সব বাজারেই বহুল ব্যবহৃত এই পণ্যটির সমান চাহিদা থাকে। তবে একের পর এক হরতাল-অবরোধের কারণে ক্রেতা সংকটে পড়েছেন এর ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি বন্ধ হলে আগের অবস্থানে ফিরবে তাদের নান্দনিক প্রসাধানীর এই ব্যবসা।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার গাউছিয়া ও চিশতিয়া মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ২৫ থেকে ৩০ মিনিট পর সর্বোচ্চ তিনজন ক্রেতা আসছেন প্রসাধনীর এসব দোকানে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দেড় মাস আগেও একই সময়ে দোকানগুলোতে সর্বোচ্চ ১০ জন ক্রেতার আনাগোনা ছিল। লক্ষ্য করা যায়, দোকানে আসা ক্রেতাদের অধিকাংশই দরকষাকষি করেন। যেসব ক্রেতাদের দামে ও পণ্যের মানে সন্তুষ্টি মিলছে, তারাই কিনছেন।
ক্রেতাদের ভাষ্য, দৈনন্দিন জীবীকার নিত্যপণ্য নিয়ে এখন মানুষের নাভিশ্বাস, এই অবস্থায় পরিবারের লোকজন প্রসাধনী সামগ্রি নিয়ে ভাবার সুযোগ পায় না।
সাজসজ্জা ও নিজের সন্তানের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কিনতে এসেছেন বীথি নামের এক নারী। কথা হয় তার সঙ্গে, “বর্তমান বাজারে সব জিনিসের দাম বেশি। কিন্তু চাকরিজীবীর আয় সংসারের অন্যান্য ব্যয় নির্বাহে শেষ হয়ে যায়। ফলে প্রসাধনী জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হয়। কি করবো, কি করবো না? কোনটা কিনব, কোনটা কিনবো না? সে ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রসাধনী সামগ্রী না কেনে অন্যকিছু কেনার জন্য নজর দিতে হয়। ”
নিজের বোনকে নিয়ে প্রসাধনীসহ বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে এসেছেন রাফসান জানি নামের আরেকজন। আলাপচারিতায় তিনি বলেন, “বাজারে সব কিছুর দাম বেশি। প্রসাধানী জিনিসপত্র কিনবেন সেখানেও দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সবকিছুর বাজেট তৈরি করে বাজারে আসলেও, কেনা সম্ভব হয় না। ”
কথা হয় ওয়াসিম আকরাম নামের এক প্রসাধনী বিক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, “বাজারে সব থেকে বেশি লিপস্টিক বিক্রি হয়। অর্থনৈতিক মন্দার বাজারেও ক্রেতা এ জিনিস কেনেন। তবে বর্তমানে তুলনামূলক ব্যবসা কমেছে। মন্দা অবস্থা কাটলে ব্যবসা আরও বেশি হবে এমন প্রত্যাশা করা যায়।”
মোমেন নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, “লিপস্টিক সবচেয়ে কম দামে ক্রয় করা যায় বলে এর অবস্থান বাজারে আগের মতই আছে। বিক্রি খারাপ নয়। অনেক ক্রেতাই আসেন দরকষাকষি করে কেনেন। তবে হরতাল-অবরোধের কারণে আগের চেয়ে একটু চাহিদা কমেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আরও চাহিদা বাড়বে বলে মনে হয়।”