সকাল থেকে তীব্র রোদ আর প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস। এরমধ্যে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে তীব্র রোদকে উপেক্ষা করে ছাতা নিয়ে সড়কে অবস্থান করতে দেখা যায় অনেককেই।
বুধবার (১০ জুলাই) রাজধানীর সাইন্সল্যাব সড়কে দেখা যায়, তীব্র রোদে ওভার ব্রিজের নিচে দাঁড়িয়ে মিছিল করছেন ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের একদল শিক্ষার্থী। যারা ব্যারিকেট পাহারায় দায়িত্বে আছেন, তারা তীব্র রোদ থেকে বাঁচতে ছাতা নিয়ে বসে আছেন।
এর আগে হাইকোর্টের রায়কে ‘ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত’ আখ্যা দিয়ে সারা দেশে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। তারা এ বিষয়ে একটি স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, “আমরা কোনো ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত মানছি না। আমাদের এক দফা দাবি, সংসদে আইন পাস করে সরকরি চাকরির সব গ্রেডে শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে। এ দাবি নির্বাহী বিভাগ থেকে যতক্ষণ না পূরণ করা হবে, ততক্ষণ আমরা রাজপথে থাকব।”
এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানান আইনজীবীরা।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিকে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। নতুন করে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার দুপুর ১টার দিকে এমন ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল হাসান।
দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে জানিয়ে নাজমুল হাসান বলেন, “কোটা নিয়ে বারবার টালবাহানা দেখতে চাই না। সব গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই, পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই।”