বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতরা আবারও সড়কে নেমেছেন। রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন তারা। এতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দাবি মেনে নিতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় দিয়েছেন অবরোধকারীরা। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও স্বীকৃতি না দিলে তারা সচিবালয়ের দিকে যাবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া তাদের মধ্যে কামরুল নামের একজন গলায় রশি ঝুলিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটার দিকে মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রাখা আহতদের মধ্যে সোহেলী নামে এক নারী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কামরুল নামের ওই ব্যক্তি জানান, বিকেল ৪টার মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না দিলে আত্মহত্যা করবেন। তার গলায় ‘হয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, না হয় আত্মহত্যা!’ লেখা পোস্টার ঝুলিয়ে রাখতে দেখা যায়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিশুমেলার সামনে মিরপুর সড়কে অবস্থান নিয়েছেন আহত ব্যক্তিরা। এতে সড়কের সবদিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা।
এর আগে আহতরা জানান, গত তিন মাস আগেও জুলাই আন্দোলনে আহতরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন। তখন মধ্যরাতে হাসপাতালের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও উপদেষ্টাসহ চারজন উপদেষ্টা তাদের দাবি–দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সরে যায়। পরে তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে আহতদের স্বীকৃতি এবং পুনর্বাসন, চাকরির ব্যবস্থা, চিকিৎসা ও ভাতা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এরপর এতদিন তাদের একটি দাবিও সরকার পূরণ করেনি।
তাদের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে তাদের তিনটি দাবি না মানা পর্যন্ত তারা সড়কে থেকে সরবেন না। জরুরি ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান তারা। এ ছাড়া প্রত্যেক আহতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ভিত্তিতে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান।
পঙ্গু হাসপাতাল, নিউ সায়েন্স ও চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শতাধিক আহত ব্যক্তি রাস্তায় নেমে এসেছেন। সড়কে শুয়ে অনেকেই স্লোগান দিচ্ছেন। কেউ কেউ স্ট্রেচারে ভর করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। তারাও নানা ধরনের বৈষম্যবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন।
এ সময় জুলাই আন্দোলনের আহতরা ‘দালালি না বিপ্লব, বিপ্লব বিপ্লব’; ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’; ‘আস্থা নাই রে আস্থা নাই’ ইত্যাদি নানা স্লোগান দিচ্ছেন।