বাংলাদেশে চলমান সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করেছে মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড)। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ইউএসএইডের অধিগ্রহণ ও সহায়তা তত্ত্বাবধায়ক চুক্তি কর্মকর্তা ব্রায়ান অ্যারনের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউএসএইডের চিঠিতে বলা হয়, ইউএসএআইডি, বাংলাদেশ বাস্তবায়নকারী সব অংশীদারদের চুক্তি, কার্য আদেশ, অনুদান, সমবায় চুক্তি বা অন্যান্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা স্মারকের অধীনে সম্পাদিত যেকোনো কাজ অবিলম্বে বন্ধ অথবা স্থগিত করার জন্য একটি নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে এই চিঠি।
চিঠিতে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া লিখিত কোনো নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে রেফারেন্স হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া এই সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্রুত একটি গাইডলাইন পাঠানোর কথাও বলা হয়।
কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্র ও শাসন, মৌলিক শিক্ষা এবং পরিবেশগত কার্যক্রমের পাশাপাশি বিশ্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য কর্মসূচি নিয়ে বাংলাদেশে ইউএসএআইডি কর্মসূচি এশিয়ার বৃহত্তম।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ইউএসএআইডি বাংলাদেশে বড় ধরনের মানবিক সহায়তা তদারকি করে। তবে এই আদেশের প্রভাব জরুরি খাদ্য সহায়তার ওপর নাও পড়তে পারে বলে জানা গেছে।
বাস্তবায়নকারী একাধিক সংস্থার সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি, তারা জানিয়েছেন বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
বাস্তবায়নকারী দেশীয় সংস্থাগুলোর দাবি, আগামী ৩ মাস মার্কিন কোনো সহায়তা পাওয়া যাবে না।
এর আগে বিদেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে এবং নতুন সাহায্য অনুমোদন বন্ধ রাখার কথা জানায় ট্রাম্প প্রশাসন। দেশটির ফাঁস হওয়া অভ্যন্তরীণ নথিতে এই তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা ও বিদেশি দূতাবাসগুলোতে এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এরপরই সহযোগিতা বন্ধের বিষয় প্রকাশ্যে আসে।
ফাঁস হওয়া এই নথি অনুযায়ী, আগামী ৯০ দিনের জন্য সব মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যেসব বৈদেশিক সহযোগিতা স্থগিত করা হয়েছে, সেগুলো বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা খতিয়েও দেখা হচ্ছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।