এক সপ্তাহের অচলাবস্থার পর রাজধানীর সড়কে কাজে ফিরেছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
সোমবার (১২ সকালে রাজধানীর বাংলা মোটর, কারওয়ান কাজার, বিজয় সরণী, জাহাঙ্গীর গেইট এবং মহাখালীতে ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
কোনো কোনো জায়গায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা এখনও আছেন। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় তাদের সংখ্যা কম।
তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার স্নেহাশীষ দাশ বলেন, “রমনা-তেজগাঁও এলাকা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে এখানে প্রায় সর্বত্র ট্রাফিক পুলিশ কাজে নেমে গেছে। বিশেষ করে তেজগাঁও এলাকার কথা বলতে পারি যে, এখানে ৮০ শতাংশ ফোর্স নেমেছে। আমাদের উপস্থিতির পর শিক্ষার্থীরা বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।”
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারপতনের পর বিভিন্ন থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়। তাতে অনেক পুলিশ সদস্য হতাহত হন, আতঙ্কে বেশিরভাগ থানা পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। রাস্তাঘাটে থেকেও উধাও হয়ে যান ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।
এ অবস্থায় রাজধানীসহ সারা দেশের সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে। তখন সেই দায়িত্ব সামলাতে মাঠে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুলের উঁচু ক্লাসের শিক্ষার্থীদের।
এই কদিন ঢাকার প্রায় সব রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দিনরাত ঘাম ঝরিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ কাজে তারা যাত্রীদের প্রশংসাও পেয়েছেন। অনেক সড়কে শিক্ষার্থীদের খাবার পানি, খাবার এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেক।
পুলিশের অনুপস্থিতিতে যানজটের এই শহরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আনসার ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদেরও কাজে লাগানো হয়।
নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশকে কাজে ফেরাতে উদ্যোগী হন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। সেজন্য বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে তিনি রোববার বলেন, ওই সময়ের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে অনুপস্থিতরা আর ‘চাকরি করতে চাইছেন না’ বলে ধরে নেওয়া হবে।
এরপর সোমবারই রাস্তায় নেমে ট্রাফিক পুলিশের দেখা পাওয়ায় অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
শাহবাগে পথচারী মহামিলুল ইসলাম বলেন, "অনেকদিন পর রাস্তায় ট্রাফিক দেখে বেশ ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে দেশে পুলিশ বলে কিছু আছে। এতদিন শুনতাম থানায় পুলিশ এসেছে, কিন্তু বাস্তবে দেখিনি।"
সকালেই পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম এক সঙ্গীকে নিয়ে বাইকে চড়ে তার এলাকায় রাস্তার পাশের দোকানে আসেন চা খেতে।
তিনি বলেন, “সকালেই বঙ্গবাজার, গুলিস্তান এলাকায় ট্রফিক পুলিশ দেখলাম। এতদিন শিক্ষার্থীদের অধীনে বেশ অস্বস্তি হচ্ছিল। আমরা এবার একটা সত্যিকারের পরিবর্তন চাই। দুর্নীতি মুক্ত জনবান্ধন সরকার চাই।"