মেট্রোরেল, বিআরটিএ উড়াল সড়কের মেগা প্রকল্পগুলোর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে আগামীর ঢাকা হবে আধুনিক ও গতিশীল। পাশাপাশি রাজধানীকে সম্প্রসারিত করার জন্য নতুন যে প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন হলে ঢাকার চিরাচরিত রূপ বদলে যাবে। এছাড়া ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) কার্যক্রম শুরু হলে আধুনিক ঢাকায় নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। নতুন দিগন্তের ছোঁয়ায় ঢাকা হবে আরও বিস্তীর্ণ। তখন সত্যিকার অর্থে ঢাকা একটি মেগাসিটি হবে বলে মনে করছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা।
সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, “আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য মহানগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিদ্যমান নানা সমস্যা কমানো হবে। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী ড্যাপ বাস্তবায়নের পর ঢাকাকে ছয়টি অঞ্চলে ভাগ করে লেক, খাল এবং নদীকে সংযুক্ত করে যোগাযোগের মাধ্যম প্রতিষ্ঠা করা এবং বৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতা নিরসন, বিনোদনমূলক পার্ক করাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।”
রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, “ঢাকার পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে গড়ে তোলা হবে এসব প্রকল্প। মূলত রাজধানীতে জনঘনত্বের চাপ কমাতেই এসব নতুন উপশহর গড়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ করে এখন চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। বাকি চারটির সম্ভাব্যতা যাচাই শেষের পথে। প্রকল্পগুলো গতানুগতিক থেকে ভিন্ন ধরনের হবে। এতে বদলে যাবে গোটা রাজধানীর অবয়ব। প্রচলিত প্লটের পরিবর্তে দেওয়া হবে ব্লকভিত্তিক বরাদ্দ। আবার শিক্ষার জন্য বিশেষ অঞ্চল করা হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক মানুষের আবাসনের চাহিদা থেকেই এসব নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। নদীভিত্তিক করা হবে একটি। আইটি নির্ভর থাকবে বিশেষ এই প্রকল্পগুলো।”
সড়কের শৃঙ্খলা নিয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান বলেন, “শহরের প্রধান সড়কের যানবাহনকে যদি নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যায়, তাহলে বদলে যাবে আগামীর ঢাকা। রাজধানীর ভেতরে যোগাযোগ ব্যবস্থা শহরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সড়ক না থাকলেও যতটুকু আছে, সঠিক ব্যবস্থাপনায় নিয়ে এলে বদলে যাবে ঢাকা। বিশেষ করে মেট্রোরেল ও বিআরটিএর মতো মেগা প্রজেক্টগুলোর কাজ শেষ হলে বদলে যাবে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা।”
তিনি আরও বলেন, “রাজউক প্রতিষ্ঠার পর থেকে শহরের যে কয়টি প্রকল্প গ্রহণ করেছে প্রত্যেকটি ছিল সুপরিকল্পিত। বিশেষ করে গুলশান, বারিধারা, বনানী, উত্তরা, সবশেষ যুক্ত হয়েছে পূর্বাচল। এসব এলাকার নাগরিকের সকল সুযোগ-সুবিধা মাথায় রেখে প্রকল্পগুলো সাজানো হয়েছে। বিশেষ করে পূর্বাচল প্রকল্পে নির্মাণ করা হচ্ছে সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে (বিরতিহীন সড়ক)। এটি হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় এক্সপ্রেসওয়ে। রাজধানীর প্রগতি সরণি ও বিমানবন্দর সড়কের সঙ্গে পূর্বের ইস্টার্ন বাইপাসকে সংযুক্ত করবে এ সড়কটি।”