ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের দাবির প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, “নানা দাবি নিয়ে যারা আন্দোলন করছে, তাদের কথা শুনতে হবে। আন্দোলন করলেই ট্যাগ দেওয়া যাবে না।”
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষ থেকে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আশু করণীয় প্রস্তাব ১০০ দিনে কতটা বাস্তবায়ন হলো’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান সরকারে বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করে আনু মুহাম্মদ বলেন, “এখন পর্যন্ত জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের পূর্ণ তালিকা হয়নি এবং তাদের পরিবারের দায়িত্বও নেয়নি সরকার। ২০১৪-২৪ সাল পর্যন্ত দায়ের হওয়া হয়রানিমূলক মামলাও প্রত্যাহার হয়নি।”
কতদিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচন দেওয়া প্রয়োজন, এমন প্রশ্নের জবাবে আনু মুহাম্মদ বলেন, “আমরা মনে করি, নির্বাচন ব্যবস্থার মধ্যে যে ধস নেমেছিল, তা মেরামত বা সংস্কার করতে হবে। যথাযথভাবে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের কাঠামো তৈরি করা এ সরকারের দায়িত্ব। তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। অনেকগুলো সংস্কার আছে, যা দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার, তা নির্বাচিত একটি স্থায়ী সরকার ছাড়া বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে অনেকগুলো ভিত্তি তৈরি করতে পারে এ সরকার। বিভিন্ন কমিশন হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে তৈরি হবে। সেই প্রক্রিয়াটা চলতে পারে।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, “নির্বাচনের বিষয়ে একটি প্রস্তুতি বা পথনকশা বা উদ্যোগ, কবে নাগাদ নির্বাচন হবে, কী কী পদ্ধতিতে তারা অগ্রসর হবে, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন। যথাযথভাবে এ ঘোষণা না এলে, এটি যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে একটি অনাস্থা বা অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার শঙ্কা থাকে। তা থেকে বাঁচার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ বা পথনকশা ঘোষণা করা উচিত বলে আমি মনে করি।”
আনু মুহাম্মদ বলেন, “কতদিনের মধ্যে নির্বাচন চাই, সেই তারিখ তো নির্দিষ্ট করে আমরা বলতে পারব না। তবে আমরা মনে করি, সব কাজই আপনি যদি গুরুত্বের সঙ্গে নেন এবং দক্ষতার সঙ্গে করেন তাহলে যত সময় লাগবে, গুরুত্বের সঙ্গে না নিলে তার থেকে বেশি সময় লাগবেই।”
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, “আমি মনে করি, সরকার গুরুত্বের সঙ্গে এটি নেবে এবং যথা শিগগির সম্ভব, সে বিষয়ে জনগণকে পরিষ্কার বক্তব্য দেবে। নইলে একটি অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে, অনাস্থা তৈরি হওয়ার শঙ্কা আছে। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু অস্থিরতা দেখতে পাচ্ছি। সেগুলো যাতে বন্ধ হয়। সেজন্য সরকারের এ উদ্যোগ নেওয়া দরকার।”
এসময় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে মোদি সরকার মিথ্যাচার করছে বলেও মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, “মব বা দলগত আক্রমণ এখনো থামেনি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। শেখ হাসিনার সময়ের অর্থনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন হয়নি।”