• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নতুন চমক থাকবে আ.লীগের ইশতেহারে


সফিকুল ইসলাম
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৩, ০৯:৫৬ পিএম
নতুন চমক থাকবে আ.লীগের ইশতেহারে
প্রতীকী ছবি

আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে থাকবে বেশকিছু নতুন চমক। ১৫ বছর আগের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে এবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় দলটির। প্রাধান্য পাচ্ছে সর্বত্র প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার জন্য শিল্পায়নেও রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। থাকবে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ বিনির্মাণের রোডম্যাপও।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে চমক দেওয়া এই ‘নির্বাচনী ইশতেহার’ ঘোষণা করবেন দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের ইশতেহারে কীভাবে সুশাসন নিশ্চিত করা যায়, তার জন্য বিভিন্ন নীতির কথা গুরুত্ব সহকারে ইশতেহারে তুলে ধরা হবে। প্রতিটি কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা ও প্রযুক্তির সহজলভ্যতা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাতে ফলন বৃদ্ধি, বিনিয়োগে আকৃষ্ট করাসহ কর্মসংস্থানের পথ সুগম করার প্রত্যয়।

ইশতেহারে ব্যাংকিংখাতসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে কীভাবে শৃঙ্খলা আনা যায়,তা প্রস্তাব করা হবে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র আরও কীভাবে সুদৃঢ় করা যায়, তার সুনির্দিষ্ট সুপারিশও থাকবে।

২০০৮ সালে ‘দিন বদলের সনদ’ শিরোনামে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালেও ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে ১০টি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে দলটি। 
একইভাবে ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও ২১০০ সালের মধ্যে নিরাপদ ব-দ্বীপ গড়ে তোলার পরিকল্পনা দেওয়া হয়।

এবারের লক্ষ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। এজন্য চারটি মৌলিক স্তম্ভ ঠিক করা হয়েছে- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সরকার প্রতিষ্ঠা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রণীত আওয়ামী লীগের ইশতেহারে এ নিয়ে বিশদ কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকছে। পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী জনবল গড়ে তোলায় গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। সেটাকে ঘিরে অর্থনীতির শক্ত ভিতের ওপর দেশকে দাঁড় করানোর উচ্চাভিলাসী লক্ষ্য নির্ধারণ করে কর্মসূচি নিচ্ছে দলটি।

এর বাইরে কৃষি, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুতের উৎপাদন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, তরুণ, মাদকসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুস্পষ্ট কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকছে। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে এবার আরও থাকছে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গঠন, বিদেশনির্ভরতা কমানো এবং বিদেশি ষড়যন্ত্র মুক্ত থাকতে নানা কর্মসূচি।

এসব বিষয়ে কথা হয় আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে। তিনি বলেন, “এবারের ইশতেহারে সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়েছি। তারা অর্থনীতির অবকাঠামো, কৃষি, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুতের উৎপাদন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, মুদ্রাস্ফীতির ফলে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে-এসব বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। আমরা এগুলো কীভাবে মোকাবিলা করতে যাচ্ছি, এগুলো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে বলা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “ইশতেহারে প্রথমে পটভূমি থাকবে; বাংলাদেশের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি, বিদেশি শক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্র এবং দেশের মধ্যে যারা বিদেশিদের পা চাটা, এদের বিষয়ে কী কর্মসূচি নেবো, কী কৌশল অবলম্বন করবো, কীভাবে মোকাবিলা করবো- এগুলো থাকবে।” 
ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক এই রাজনীতিবিদ আরও বলেন, “ইশতেহারে আমাদের কিছু অগ্রাধিকার থাকবে-যেমন কৃষি, তরুণ, মাদকসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকবে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা ইশতেহার প্রণয়ন করেছি। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে। আশা করি, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পরে ঘোষণা দেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে কথা হয় ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান এর সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দুটো অংশ থাকবে। প্রথমাংশে থাকবে গত নির্বাচনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের চিত্র। দ্বিতীয়াংশে আগামী পাঁচ বছরের প্রতিশ্রুতি। পাশাপাশি তারপরের পাঁচ বছর/সময়ের জন্য রূপরেখা থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “এবারের ইশতেহারে যুব ও নারীদের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকবে। দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে নানা পরিকল্পনা-যেমন কর্মসংস্থান, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাসহ শিল্পায়নের ওপর জোর দেওয়া হবে।”

ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, “দ্বাদশ নির্বাচনী ইশতেহার ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন। এরই মধ্যে তিনবার বৈঠক করে ইশতেহারের খসড়া চূড়ান্ত করেছে কমিটি। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা সেটি দেখে কিছু সংযোজন-বিয়োজনও করেছেন। এটি এরই মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে। ঘোষণা অপেক্ষা মাত্র।”

Link copied!