চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের আদালতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর)। কিন্তু আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। তাই আগামী ২ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের এডিসি (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান।
জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপরই আদালত এলাকায় শুরু হয় তার অনুসারীদের তাণ্ডব। কারাগারে নেওয়ার জন্য তাকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানটি আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন।
একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর এবং চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন তার বাবা জামাল উদ্দিন। এতে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়।
নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন কোতোয়ালি থানার বান্ডেল রোড সেবক কলোনি এলাকার বাসিন্দা চন্দন, আমান দাস, শুভ কান্তি দাস, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত, রুমিত দাশ, নয়ন দাস, গগন দাস, বিশাল দাস, ওমকার দাস, বিশাল, রাজকাপুর, লালা, সামির, সোহেল দাস, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, দুর্লভ দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।
একই দিন শুক্রবার কোতোয়ালি থানায় আরও একটি মামলা করেন আলিফের বড় ভাই জানে আলম। আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে ১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়।
এর আগে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তিনটি মামলা করে পুলিশ। নতুন দুটি নিয়ে ২৬ নভেম্বর আদালত এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট পাঁচটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।