• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর মাঝে কোনো বিভাজন নেই’


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
‘মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর মাঝে কোনো বিভাজন নেই’

সংসদ সদস্য তারানা হালিম বলেছেন, “জাতির পিতার রাজনৈতিক আদর্শ যদি সমাজে প্রতিফলিত হতো, তাহলে আমাদের সমাজে সবাই রাজনীতিবীদই হতে চাইত। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর মাঝে কোনো বিভাজন নেই, এটা থাকা উচিত নয়। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এ বিষয়টি আমাদের তুলে ধরতে হবে।”

সোমবার (২৫ মার্চ) বেলা ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণ এবং এই গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে  ‘একাত্তরের গণহত্যা : ইতিহাসের দায় ও আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারানা হালিম বলেন, “স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করলে আওয়ামী লীগকে ছোট করা হয়, একটা পক্ষের এ ধরনের বিকৃত চিন্তা-চেতনার কারণে ইতঃপূর্বে মিথ্যা ইতিহাসচর্চা হয়েছে। এই গোষ্ঠী আওয়ামী বিরুদ্ধাচারণ করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও সম্ভ্রমহানী নারীর সংখ্যার ভুল প্রচার করে থাকে। যে কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো বিভেদ থাকতে পারে না এবং জাতির জনক সম্পর্কেও স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো বিভেদ থাকতে পারে না।”

তারানা হালিম আরও বলেন, “বিশ্বের প্রতিটি প্রজন্ম প্রকৃত সত্তা খোঁজ করার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে। আর আমরা উল্টোটা করছি। আমাদের শিকড় জানতে হবে, ইতিহাস জানতে হবে। আমাদের দাবি তোলা উচিত যে, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গণধর্ষণে মত্ত ছিল, তার একটি তালিকা তৈরি করে প্রকাশ করতে হবে।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী।

সেমিনারে সাদেকা হালিম বলেন, “যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরোধিতা করেছিলেন, তারাই রাজনৈতিক অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সংখ্যাতাত্ত্বিক অপপ্রচার করেই যাচ্ছেন। যার কারণে দীর্ঘ ৫০ বছর পার হলেও আমরা আন্তর্জাতিক জেনোসাইডের স্বীকৃতি আনতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি।”

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম বলেন, “একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে আমাদের জেনোসাইড পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক স্টেকহোল্ডারদের এ বিষয়ে আরও সক্রিয় হতে হবে এবং জেনোসাইড বিষয়ে গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। আর জাতিসংঘ থেকে এখন যদি স্বীকৃতি নাও পাই অন্তত বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে স্বীকৃতি আদায় করতে হবে।”  

মুখ্য আলোচক হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ বলেন, “গণহত্যাকে অস্বীকার করা যাবে না, এই সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে।”

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন এবং সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারহানা জামান ও লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা আক্তার।

অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার, দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা, সাংবাদিক প্রতিনিধি এবং কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!