• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
ডলার নিয়ে অজুহাত

পর্যাপ্ত মজুত আছে, তবু আটার কেজি ৭০ টাকা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৩, ০৫:২৬ পিএম
পর্যাপ্ত মজুত আছে, তবু আটার কেজি ৭০ টাকা
প্রতীকী ছবি

উত্তরা আজমপুর বাজার থেকে ২ কেজির এক প্যাকেট আটা কিনেছেন মো. জাহিদুর রহমান। বিপরীতে তাকে দাম দিতে হয়েছে ১৩০ টাকা। অথচ কিছুদিন আগেও একই আটা বাজারে বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকায়। এই ক্রেতা বলেন, “এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আটায় দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা।” বাজারে চাহিদা অনুযায়ী আটার মজুত থাকার পরও দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।

মো. জাহিদুর রহমান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “গত সপ্তাহেও আটা কিনেছি। তখন বাজারে প্রতি কেজি প্যাকেটের আটা ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একই আটা এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০-৬৫ টাকা। আবার কেউ ৭০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করছেন। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। আটার পর্যাপ্ত মজুত আছে, অথচ বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রেখেছে ব্যবসায়ীরা।

শুধু প্যাকেট আটায় দাম বেড়েছে তা নয়, খোলা আটাতেও প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৬-৮ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য সংকট তাই দাম বেশি। আড়ত মালিকরা বলছেন, ডলার সংকটে আমদানি কমায় তাই দাম বেশি।

জানা যায়, গত সপ্তাহে খোলা আটা কেজিতে ৪২-৪৫ টাকা এবং প্যাকেট আটা ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ভোগ্যপণ্য বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গম আমদানিতে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বাজারে দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।

আদা ও ময়দার এক খুচরা ব্যবসায়ী জানান, “করোনা মহামারির পর শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার প্রভাব পড়েছে বিশ্বের অর্থনীতিতে। এর নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়েছে। যে কারণে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। বড় ব্যবসায়ীরা ডলার সংকটের কারণে পণ্য আমদানি করতে পারছে না। যদিও তারা পণ্য আনছে, তবে সেটা চড়া দামে। ব্যবসায়ীরা চড়া দামে পণ্য বিক্রি করলে আমাদের মতো সাধারণ ব্যবসায়ী যারা আছেন, তারা লাভ ছাড়া পণ্য বিক্রি করবে নাকি। আমাদেরও তো পরিবার আছে।”

তিনি আরও বলেন, “সামনে নির্বাচন ঘিরে হরতাল-অবরোধ বাড়ায় আগের চেয়ে পণ্য সংকট আরও বেড়েছে। এখন আমাদের এখানে কি দোষ আছে বলেন। আমরা যে টাকায় পণ্য ক্রয় করি তার চেয়ে সীমিত লাভে বিক্রি করতে হয়। এতে যদি ক্রেতারা বলেন পণ্যের দাম বেশি হচ্ছে; তাহলে আমাদের এখানে কিছু করার নেই।”

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি)’ তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে খোলা আটার কেজিতে সাড়ে তিন এবং প্যাকেট আটার ১৪ শতাংশ দর বেড়েছে। একই সময় ময়দার কেজিতে বেড়েছে ৮ থেকে ৯ শতাংশ।

আমদানিকারকদের তথ্য মতে, দেশে বছরে গমের চাহিদা ৮৫ থেকে ৮৬ লাখ টন রয়েছে। তবে উৎপাদন হয় খুবই সীমিত। ফলে প্রতিবছর গম আমদানি করতে হয় ৭৪ থেকে ৭৫ লাখ টন। যার সিংহভাগই আমদানি হয় ইউক্রেন থেকে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে গম আমদানি ব্যাহত হয়। তখন দেশের আটা ও ময়দার বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। ওই সময় খোলা আটার কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা থেকে ধাপে ধাপে বেড়ে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় ওঠে। একইভাবে ৪০ থেকে ৪৫ টাকার ময়দার কেজি বেড়ে হয় ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। যা গত তিন মাস নিম্নমুখী ছিল।

Link copied!