জাতীয় সংসদে এই মুহূর্তে একাদশ সংসদের ৩৫০ জন আর ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন মোট ৬৪৮ জন এমপি রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সরকার ক্ষমতায় সংবিধান, আইন, নিয়মনীতি—সবকিছু পদপিষ্ট করে দেশে একচ্ছত্র শাসন কায়েম করেছে। তাড়াহুড়ো করে ক্ষমতা নবায়ন করার শপথ নিতে গিয়ে তারা আইন ও সংবিধানের কবর রচনা করেছে।”
রিজভী বলেন, “এ মুহূর্তে একাদশ সংসদের ৩৫০ জন আর ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন মোট ৬৪৮ জন শপথবদ্ধ এমপি রয়েছেন। এখন রাষ্ট্রপতি সংসদ অধিবেশন ডাকলে দুই সংসদের সদস্যরাই তাতে যোগ দিতে পারেন। অথচ এটি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ।”
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, “২৯ জানুয়ারি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়া অবধি এই অরাজকতা থাকবে। এটি একটি চরম সাংবিধানিক লঙ্ঘন। সংবিধান অনুসারে এটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ। এ জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতিও এ দায় থেকে মুক্ত নন। ফলে অবৈধ মন্ত্রী পরিষদের কোনো অন্যায্য আদেশ–নির্দেশ দেশের জনগণ মানতে বাধ্য নয়।”
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের ভোট রঙ্গ ও ভোট গণনা শেষ না হতেই ডামি এমপিদের নামে গেজেট করা, শপথ গ্রহণ, মন্ত্রী পরিষদের নাম ঘোষণা, মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণের মতো প্রক্রিয়া অভাবনীয় দ্রুততায় মাত্র চার দিনেই সম্পন্ন করেছেন।”
রিজভী বলেন, “একাদশ সংসদের মেয়াদ আছে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। সেই সংসদ ভেঙে না দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্বাদশ সংসদের সদস্যরা অবৈধভাবে শপথ নিয়েছেন। ফলে দেশে এখন দুই সংসদের সংসদ সদস্য রয়েছেন।”
বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, “সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘রাষ্ট্রপতি আগে সংসদ ভেঙে না দিয়ে থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যাবে।’ সংবিধানের এই বিধানমতে, ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি শুরু হওয়া একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২৯ জানুয়ারি। যেহেতু রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেননি, সেকারণে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত একাদশ সংসদের যারা সংসদ সদস্য ছিলেন, তারা সংসদ সদস্য হিসেবে বহাল আছেন।”
রিজভী আরও বলেন, “দেড় দশক ধরে দেশের ভোটবঞ্চিত মানুষের প্রাণের দাবি—নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন অবাধ–সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে একটির পর একটি ‘বিনা ভোট’, ‘নিশি ভোট’, ‘ডামি নির্বাচন’ করে ক্ষমতা দখল করে দেশে একচ্ছত্র শাসন কায়েম করেছে।”
রিজভী অবৈধ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ হাজার হাজার রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে চলমান একদফার আন্দোলনে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।