ন্যায়, সমতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ কখনো পিছপা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন গণতন্ত্র চর্চা করেছে। ধর্মকে কোনো সময় রাজনীতিতে ব্যবহার করেনি। সর্বক্ষেত্রে ডেমোক্রেসি (গণতন্ত্র) প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর বনানী শেরাটন হোটেলে ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ন্যাশনাল ডায়লগে তিনি এসব বলেন।
আওয়ামী লীগ সর্বক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “একটা রাজনৈতিক দলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতভেদ তৈরি হয়। সেসব তাদের সমাধান করে চলতে হয়। আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী ও সংগঠিত দল। তাই আন্দোলন সংগ্রাম করে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না, নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় আসতে হবে।”
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলের মধ্যে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে আছি আমরা। তবে, রাজনৈতিক প্র্যাকটিস থাকতে হবে সবগুলো দলের মধ্যে। বিএনপি ভালো আন্দোলন করতে না পারার কারণ ‘আওয়ামী লীগের উন্নয়ন দৃশ্যমান’। বিশ্ব দরবারেও স্বীকৃত। এ জন্যই তাদের আন্দোলনে মানুষ সাড়া দেয় না।”
কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশে কোনো দিন খাদ্যসংকট হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের উন্নয়নে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছে। সেই সঙ্গে সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এর ফলে দেশে আর কোনোদিন খাদ্যসংকট হবে না।”
দেশের কৃষি খাতের সাফল্য আজ বিশ্বস্বীকৃত জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, “একসময় ৭ কোটি মানুষের এ দেশে খাদ্যসংকট দেখা দিত, আজ ১৭ কোটি মানুষের কেউ না খেয়ে থাকে না। এখন খাদ্যের জন্য আমরা কারও কাছে হাত পাতি না। দেশে মঙ্গা হয় না, দুর্ভিক্ষ হয় না। বিগত ১৪ বছরে কেউ না খেয়ে থাকেনি, একজনও না খেয়ে মারা যায়নি। দেশে ৫০ ভাগ তেল উৎপাদনের মাধ্যমে আমদানিনির্ভরতা কমাতে তিন বছর মেয়াদি রোডম্যাপ আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। প্রথম বছরেই এবার সারা দেশে দ্বিগুণ পরিমাণে শর্ষের চাষ হয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে শর্ষের আবাদ বৃদ্ধির সম্ভাবনার পুরোটা কাজে লাগাতে হবে। যাতে দুই বছর পরে ভোজ্যতেল আমদানি অর্ধেকে নামিয়ে আনা যায় ও আমদানিতে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে বিএনপি, জামায়াত ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। তারা নির্বাচনকে বানচাল করে অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় আসতে চায়। সেজন্য তারা একেক দিন একেকটা আন্দোলনের আওয়াজ তোলে। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনের আওয়াজ দেশের জনগণের নিকট পৌঁছে না, জনগণ তাতে সাড়া দেয় না। কারণ, জনগণ আওয়ামী লীগের আমলে দেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, তা দেখতে পায় ও উপলব্ধি করে।”