বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভকারীদের স্রোত এসে মিলিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
ঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার বিকেল তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা। তবে দেড় ঘণ্টা আগে থেকেই সেখানে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন শিক্ষক, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের নাগরিক।
যতই সময় গড়াতে থাকে ততই স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। এর মধ্যেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন শহীদ মিনারের দিকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষও কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসছেন শহীদ মিনারের দিকে। সবার কণ্ঠে নানা স্লোগান। তারা অবস্থান নিচ্ছেন শহীদ মিনারের সামনে।
রবীন্দ্র সরোবর থেকে ব্যান্ডসহ নানা মাধ্যমের শিল্পীদের অনুষ্ঠান কথা থাকলেও তারা সবাই মিলে চলে আসেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে। শত শত শিল্পী ও ছাত্রজনতা পদযাত্রা করে শহীদ মিনারে এসে জড়ো হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হালকা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই শহীদ মিনারে বিক্ষোভকারীদের আসতে দেখা যায়। বিকেল তিনটার দিকে হাজার হাজার ছাত্রজনতায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে গোটা প্রাঙ্গণ। সেই সঙ্গে নানা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে আশেপাশের এলাকা।
বিক্ষোভকারীরা এসময় সরকারের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। প্ল্যাকার্ড হাতে সেখানে করতালির মধ্য দিয়ে তারা এসব স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে রিকশাচালকদেরও অংশ নিতে দেখা যায়। তাদের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরাও অংশ নিয়েছেন। তারা বলছেন, আমাদের অনেক ভাইকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। এই সরকারের অধীনে আমাদের ভাইয়ের খুনিদের বিচার আমরা পাব না।
ছাত্রজনতার ঢল নামলেও শহীদ মিনার ও এর আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক শিক্ষক জানালেন, ‘শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি মেনে নিলেও সরকার কয়েক দিন পর আবার দমন নিপীড়ন শুরু করবে। তাদের একটার পর একটা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল। তাই প্রধানমন্ত্রী নৈতিকভাবে ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারিয়েছেন।
স্লোগান-প্ল্যাকার্ড
শহীদ মিনারে আসা আন্দোলনকারীরা ‘বাংলাদেশের জনগণ, নেমে আসুন নেমে পড়ুন’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’- এ রকম নানা স্লোগান দেন। এ সময় হাতে হাতে ‘গণহত্যার দায়ে খুনিদের বিচার করা হবে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।