দেশের কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৭৭, কিন্তু ৭০ হাজার ৬৫ জন বন্দি আছেন বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোতাহের হোসেন। তিনি বলেছেন, “সারা দেশের কারাগারে সবমিলিয়ে ৪২ হাজার ৮৭৭ বন্দির ধারণক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু বন্দি রয়েছে ৭০ হাজার ৬৫ জন।”
সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে ঢাকার বকশীবাজারে কারা সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ মোতাহের হোসেন বলেন, “এই মুহূর্তে প্রথম শ্রেণির বন্দি আছেন ১৫১ জন, যারা ডিভিশনপ্রাপ্ত। তাদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী আছেন ৩০ জন, সাবেক সংসদ সদস্য আছেন ৩৮ জন, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছেন ৭০ জন এবং অন্যান্য আছেন ১৩ জন। এর বাইরে একটু বিশেষ বন্দি সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সংসদ সদস্য সরকারি কর্মকর্তা এমন ২৪ জন আছেন, যারা ডিভিশন পাননি বিভিন্ন কারণে।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, “৫ আগস্টের পর জেল ভেঙে পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে এখনো ৭০০ জন পলাতক আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ও জঙ্গি ৭০ জন পলাতকের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ৬৯ জন এখনো পলাতক রয়েছেন।”
সৈয়দ মোতাহের হোসেন বলেন, “কথা উঠেছে বেশকিছু বিশেষ বন্দি তারা বাসার খাবার খাচ্ছেন, রাজার হালে আছেন। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, কারাগারে আমরা ন্যায়সংগত আচরণের প্র্যাকটিস করছি। শুধু যে বিশেষ বন্দি তা না, যেকোনো বন্দির ক্ষেত্রে আমরা ছাড় দিচ্ছি না।”
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, “বাসার খাবার কেউ খেতে পারছেন না, এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। কেউ যদি বলেন বিশেষ বন্দিরা কারাগারে মোবাইলে কথা বলতে পারছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, কয়েকটি কারাগার যেগুলো আমি বিশেষ ব্যবস্থাপনায় রেখেছি, ওখানে তারা কোনোভাবেই মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না। অন্য জায়গায় করছেন কিনা, কারণ তারা সবসময় আমাদের কাছে থাকে না। অনেক সময় তারা রিমান্ডে যান, অনেক সময় আদালতে যান। আমি শতভাগ কারাগারের ভেতরে নিশ্চয়তা দিতে পারি “
কারাগারে বাটন মোবাইল ফোন ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সৈয়দ মোতাহের হোসেন বলেন, “যেসব মোবাইল অবৈধ, সেসব যেন বাজারে বিক্রি না হয় বা অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়, সেজন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছি। আর কারাগারে আনা মোবাইলগুলো খুবই ছোট, যা পায়ুপথে আনা হয়। কখনো বডি স্ক্যানারে ধরা পড়ে না। অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় আমাদের।”
কারাগারকে মাদক এবং মোবাইলমুক্ত করার জন্য গত ৩ মাসে শুধু কেরানীগঞ্জ কারাগারে ২৭৫টি ঝটিকা তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থসহ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ছোট বাটন ফোন এবং মাদক উদ্ধারের কথা সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন কারা মহাপরিদর্শক।