• ঢাকা
  • শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাল্টে যাচ্ছে যমুনায় নতুন রেলসেতুর নাম


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৮:৫৫ এএম
পাল্টে যাচ্ছে যমুনায় নতুন রেলসেতুর নাম

দেশের উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর’ নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এই রেলসেতুর নাম কী হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুটির নাম পরিবর্তনের জন্য উচ্চপর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। সেতুটি আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে উদ্বোধনের আগেই নাম পরিবর্তন হতে পারে। তবে নতুন নাম কী হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “মূল রেলসেতুর কাজ শতভাগ সম্পন্ন। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৬ শতাংশ। চলতি বছরের আগামী ডিসেম্বর নাগাদ আমরা ট্রেন চলাচলে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করব এবং সে লক্ষ্য নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। ২০২৫ সালের জানুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই রেলসেতুটি উদ্বোধনের পর বাণিজ্যিকভাবে উন্মুক্ত করতে চাই।”

এদিকে গত মঙ্গলবার সেতু দিয়ে উদ্বোধনী ট্রায়াল ট্রেন চলাচল করেছে। ট্রায়াল ট্রেনের শুরুতে ঘণ্টায় গতি ছিল ১০ কিলোমিটার, পরেরবার ঘণ্টায় গতি ছিল ২০ ও ৪০ কিলোমিটার। এর আগে গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে সকাল থেকে ট্রায়াল ট্রেন চলাচল শুরু হয়। উদ্বোধনী ট্রায়াল ট্রেনটি ২০ মিনিটে পশ্চিমপাড়ে পৌঁছায় এবং ১০ মিনিটে ফিরে আসে। মাঝপথে পশ্চিমপাড় থেকে ছেড়ে আসা অপর ট্রায়াল ট্রেনটি ক্রসিং করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দেশের এই দীর্ঘতম স্বতন্ত্র রেলসেতু দিয়ে বিরতিহীনভাবে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে সেতু পারাপার করতে পারবে। ফলে সেতু পারাপারে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় বাঁচবে। নির্মাণাধীন এই রেলসেতুতে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাই স্পিড) ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরে এর মেয়াদ ২ বছর বাড়ানো হয়। ফলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থায়ন এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে। বর্তমানে রেল জাদুঘর নির্মাণে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় হাজার কোটি টাকার অর্থ সাশ্রয়ে হচ্ছে।

১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেলযোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার করছে। এই সমস্যার সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।’

Link copied!