• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এসেছে বিজয়ের মাস


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৩, ১২:১১ এএম
এসেছে বিজয়ের মাস
শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়ের মাস ডিসেম্বর । ছবি : সংগৃহীত

শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এ মাসেই নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। ধরা দেয় হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীনতা।

মাসের প্রথম দিন থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পিছিয়ে আসতে থাকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধারাও এগোতে থাকেন রাজধানী ঢাকার দিকে। একে একে বিভিন্ন রণাঙ্গনে উড়তে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক পরিক্রমায় বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন পূরণ হয় এ মাসে।

দীর্ঘ ২৩ বছরের শোষণ আর বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর আসে বিজয়। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জিত হয় নিজস্ব ভূ-খণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ মাসে।

তবে সংগ্রামের পথ কখনোই মসৃণ ছিল না। তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জনের বেদনাবিধূর এক শোকগাথার মাসও এই ডিসেম্বর। এ মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের সহযোগিতায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান—বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেয়ার এমন ঘৃণ্য কাজের নজির বিশ্বে আর নেই।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদাররা। চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে তাদের পরাজয়ের বার্তা।

যৌথবাহিনীর একের পর এক আক্রমণের মুখে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করে দখলদাররা। একাত্তরের ৭ই মার্চ এই ময়দানেই স্বাধীনতার ডাক দিয়ে স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” সেই স্থানেই পরাজয়ের দলিলে সই করেন পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজী। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম এ দিন পূর্ণতা পায় বিজয়ের মাধ্যমে। শেষ হয় হাজার বছরের বঞ্চনার ইতিহাস।

একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী অপারেশন জ্যাকপটের নামে নিরস্ত্র জনগণের ওপর অতর্কিতে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে বাঙালির ওপর এক অসম যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। ওই রাতেই পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু। তবে তার আগেই নির্দেশ দিয়ে যান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর। তার ডাকে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। ২৫ মার্চ রাতেই রাজারবাগ পুলিশ লাইনে সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
 

Link copied!