সরকার উৎখাতের আন্দোলনে বাম-ডান মিলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, “কোথায় বামপন্থী আর কোথায় ডানপন্থী। যারা বামপন্থী তারা ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে।”
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাম, স্বল্পবাম ও অতিবাম সবাই এখন জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে মিলে গেছে। এ জন্যই বলা হয়, কী বিচিত্র বাংলাদেশ! যারা ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, দেশের টাকা পাচার, এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির নেতৃত্বে বড় বড় তাত্ত্বিকরা এক হয়ে যায় কীভাবে? সেটাই আমার প্রশ্ন। কোথায় গেল তাদের আদর্শ?”
পঁচাত্তরের পরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা চেয়েছে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চেয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে একটা টাকা রিজার্ভ ছিল না, সব নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানিরা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
যুদ্ধকালীন সময়ে কেউ চাষবাদ করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “তেমনি একটা বিধ্বংস্ত দেশের তিনি (বঙ্গবন্ধু) দায়িত্ব নিলেন। মাত্র ৯ মাসে একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চলাকালীন ভারত সরকার, সেদেশের জনগণ সময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এর সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য দেশগুলো রাশিয়সহ বিভিন্ন দেশ, এমন কী পশ্চিমা দেশগুলোতেও কোনো কোনো সরকার সমর্থন না দিলেও তাদের জনগণ আমাদের সমর্থন দিয়েছিলেন। আমেরিকা সরকার পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করলেও আমেরিকার জনগণ আমাদের পাশে ছিল। আমাদের সহযোগিতা করেছিল।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা মনে করে, বাঁশিতে ফু দিল আর দেশে স্বাধীন হয়ে গেল। এদের আসলে ভূগোল ও ইতিহাসের জ্ঞান আছে কি না সন্দেহ আছে। একটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। একটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল জাতির পিতার নেতৃত্বে। এ বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল- কীভাবে দেশটা সাজাবেন, প্রতিটি মানুষের জীবনমান উন্নত করবেন, এ জন্য তার জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন, খাদ্য দিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছেন, অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালী যাদের সৈনিকরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অকাতরে জীবন দিয়েছেন, সেই ভারত এবং অন্যান্য সহযোগী দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞাতা জানাই, আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
সভা সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।