শেখ হাসিনার ছবি প্রকাশ করলে গণমাধ্যম জ্বালিয়ে দেওয়া হবে, এমন বক্তব্য দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ হারিয়েছেন রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তাকে পদাবনতি দিয়ে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) বিএনপি সূত্রে এই খবর জানা যায়।
জানা গেছে, এই ঘটনার পর বিএনপি থেকে দুলুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
এর আগে, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর করা ওই নোটিশে দুলুকে বলা হয়, ১৬ আগস্ট ‘টিভি-পত্রিকায় খুনি হাসিনার ছবি ও বক্তব্য প্রচার করলে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে’ মর্মে আপনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আপনার এ বক্তব্য বিএনপির নীতি ও আদর্শের চরম পরিপন্থী। বিএনপি দেশের একটি উদার ও বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। এ দলটি কখনোই দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেয় না। বিগত ১৫-১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচারী সরকারের ভয়াবহ নিপীড়ন ভোগ করেছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, সম্প্রতি কোমলমতি শিক্ষার্থী ও জনতা নিজেদের জীবন দিয়ে রক্তঝরা আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন ঘটিয়ে বর্তমানে দেশে গণতন্ত্রের যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, আপনার বক্তব্য সেটিকেও কালিমালিপ্ত করেছে। আপনার বক্তব্যটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অনভিপ্রেত ও বিএনপির গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতি কুঠারাঘাত। বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে আপনার এই বক্তব্য গত দেড় দশক ধরে রক্তস্নাত পথে বিএনপির নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মহিমামন্বিত অবদানকে হেয়প্রতিপন্ন করার শামিল।
পাশাপাশি উত্তর দেওয়ার জন্য দুলুকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেধে দেওয়া হয় নোটিশটিতে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুলু বলেন, “সরকারের নির্দেশে গত ১৫ বছর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি-বক্তব্য টেলিভিশনে দেখানো হতো না, পেপারে ছবি উঠত না। আওয়ামী লীগের তাঁবেদার হয়ে তারা এসব করত। তাই যেসব টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা শত শত ছাত্র-জনতার ‘খুনি’ হাসিনার ছবি প্রচার করবে, সেসব টিভি-পত্রিকা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।”