• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দেশের কালো টাকা ও অর্থপাচারের পরিমাণ ১৪৫ লাখ কোটি


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম
দেশের কালো টাকা ও অর্থপাচারের পরিমাণ ১৪৫ লাখ কোটি

দেশে ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত ৫০ বছরে কালো টাকা ও অর্থপাচারের পরিমাণ ১ কোটি ৪৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে পুঞ্জীভূত কালো টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও বিদেশে অর্থ পাচারের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৩-২৪ : বৈষম্য নিরসনে জনগণতান্ত্রিক বাজেট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এই তথ্য উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে আবুল বারকাত বলেন, “বিকল্প বাজেটে কালো টাকাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত ৫০ বছরে কালো টাকার পরিমাণ মোট ১ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার মাত্র ২ শতাংশ সরকারকে উদ্ধারের প্রস্তাব করেছি। এটা যদি উদ্ধার করা সম্ভব হয়, তাহলে সরকার ২ লাখ ৬৫ হাজার ৭০ কোটি টাকা।”

অর্থপাচার প্রসঙ্গে বারকাত বলেন, “গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের মোট পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটে ওই অর্থের মাত্র ৫ শতাংশ উদ্ধার করা যায় তাহলে সরকার ৫৯ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ উদ্ধারের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান উৎস হতে পারে কালো টাকা ও অর্থপাচারের ওই খাত।”

তিনি বলেন, “বিকল্প বাজেটের মধ্যে রাজস্ব আয় থেকে আসবে ১৯ লাখ ২৯ হাজার ১১২ কোটি টাকা। যা চলমান অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৪ দশমিক ৪২ গুণ বেশি। অর্থাৎ মোট বাজেটের ৯৩ দশমিক ২ শতাংশের যোগান দেয় রাজস্ব। বাকি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি হবে ঘাটতি বাজেট।

বারকাত বলেন, “এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের মধ্যে আয়, মুনাফা ও মূলধনের ওপর কর অর্থ্যাৎ আয়কর প্রস্তাব ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। দেশে কোটি টাকার বেশি আয়কর দেন ১০০ জনের মতো। আমাদের গবেষণা বলছে, এই সংখ্যা ৪ লাখ ১৮ হাজার মানুষ কোটি টাকার ওপরে কর দেওয়ার কথা। আর সম্পদ কর নেওয়া হয় না। এই খাতে ২ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা আসা সম্ভব। ভ্যাট খাতে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা বর্তমান সরকারের বাজেটের মতোই। এই খাতে হাত দেয়নি, কারণ ভ্যাট বৈষম্য হ্রাসে কোনো সহায়তা করে।”

তিনি আরও বলেন, “এনবিআর বহির্ভূত কর-যেমন মাদক শুল্ক ১৫২ কোটি টাকা। যেখানে ৩০ হাজার কোটি টাকা আসতে পারে এবং ভূমি রাজস্ব থেকে আসবে ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর বাজেট ঘাটতি বড় চ্যালেঞ্জ হলেও আমরা বিদেশি অর্থায়ন ও ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়ার পক্ষে নেই। ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বিকল্প বাজেটের ঘাটতি পূরণে সঞ্চয়পত্র, বন্ড, বিদেশে বসবাসরত নাগরিক ও কোম্পানি থেকে নেওয়ার কথা বলেছি।”

সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য ২০ লাখ ৯৪ হাজার ১১২ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করা হয়েছে। যা চলতি বছরের তুলনায় তিন গুণ ও জুনে সরকারের পেশ করতে যাওয়া প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ২ দশমিক ৭ গুণ বড়।

সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও কনফারেন্সে দেশের ৬৪টি জেলা, ১৩৫টি উপজেলা এবং ৪৫টি ইউনিয়ন থেকে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

Link copied!