সংবিধান হচ্ছে কোনো রাষ্ট্র বা সরকারের প্রধান চালিকা শক্তি। সংবিধান ছাড়া কোনো রাষ্ট্রই সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হতে পারে না। সংবিধানের মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে রাষ্ট্রের ক্ষমতা কোথায়, তা নির্ধারণ করা এবং সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে বিরাজমান ক্ষমতা ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্কের মৌলিক কাঠামোর বিবরণ দেওয়া। সহজ কথায় বলা যায় যে একটি দেশের সংবিধানে ক্ষমতা সম্পর্কে বিবরণ থাকে। সমাজব্যবস্থায় এ সম্পর্কে পরিবর্তন ঘটলে সংবিধানেরও পরিবর্তনের দাবি লক্ষ করা যায়।
সরকার রাষ্ট্রের একটি মৌলিক উপাদান। রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব পালনকারী আইনি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকার সার্বক্ষণিকভাবে ক্রিয়াশীল। সরকার বলতে কোনো একক প্রতিষ্ঠানকে বোঝায় না। বরং সংবিধানের অধীনে ও সমর্থনে আইনানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত সব প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও এজেন্সিকে সরকারের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। সংবিধানে বর্ণিত আদেশাবলিকে বাস্তবায়িত করার দায়িত্বসম্পন্ন সব প্রতিষ্ঠানের সমষ্টিবাচক অভিব্যক্তিই হলো সরকার। বিভিন্ন রাষ্ট্রের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির ভিন্নতার কারণে সরকারের ভিন্ন ভিন্ন রূপ আমরা দেখতে পাই। বিশ্বের প্রতিটি দেশে সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ইচ্ছা প্রকাশিত ও কার্যকরী হয়। সরকারের ক্ষমতা ও কার্যাবলিকে মূলত তিনটি শাখায় ভাগ করা হয়। যথা আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ। সাধারণত আইন বিভাগ আইন প্রণয়ন করে। শাসন বিভাগ প্রণীত আইন কার্যকর করে। বিচার বিভাগ আইনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ এবং আইন অমান্যকারীকে শাস্তিপ্রদান করে। এভাবে তিনটি বিভাগের মাধ্যমে সরকার তার ভূমিকা পালন করে।
ক্ষমতার বিভাজন, পারস্পরিক সম্পর্ক, ভারসাম্য, জনগণের সাথে এর পরস্পর ক্রিয়া, অধিকার, কর্তব্য ইত্যাদি নিয়েই সংবিধান প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ১৬ পৃষ্ঠার। চীনের ২৬ পৃষ্ঠার। আর ইরানের সংবিধান ৩৫ পৃষ্ঠার। এই দেশগুলোতে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সংবিধান গঠিত হয়েছে। আর বাংলাদেশের রয়েছে ২৫০ পৃষ্ঠার সংবিধান।