বঙ্গোপসাগরের উপকূলে ভয়ঙ্কর সব ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে যুগের পর যুগ ধরে। সেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে সঠিক তথ্য উপাত্ত না থাকলেও প্রায় দেড়শ বছর আগে প্রলয়ংকারী এক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল উপকূলে। যা প্রাণহানি ও ভয়ংকরের দিক থেকে ছিল পৃথিবীর ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাসে ষষ্ঠ স্থানে। ইতিহাসে যা ‘বাকেরগঞ্জ ঘূর্ণিঝড়’ বা ‘দ্য গ্রেট বাকেরগঞ্জ ১৮৭৬’ নামে পরিচিত।
যেভাবে শুরু
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের আনুমানিক ১০.০ ডিগ্রি উত্তর ও ৮৯.০ ডিগ্রি পূর্ব হতে ২৭ অক্টোবর উৎপত্তি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড়টির। সেদিন সকাল থেকেই নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। যা ঘণীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। তিনদিন পর ৩০ অক্টোবর ১৫ ডিগ্রি উত্তর ও ৮৯ ডিগ্রি পূর্বে ভয়াল আকার ধারন করে। এরপর প্রবল শক্তি নিয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।
কী ঘটেছিল সেদিন
দিনটি ছিল ১৮৭৬ সালের ৩১ অক্টোবর। প্রবল বেগে ঘূর্ণিঝড়টি এসে আছড়ে পড়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জের উপকূলে। তখন বাতাসের গতিবেগ উঠে গিয়েছিল ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারে। পানি সমুদ্রতটের থেকে স্বাভাবিকের থেকে ৪০ ফুট (১২ মিটার) উপর দিয়ে বয়ে যায়।
মেঘনা মোহনাসহ চট্টগ্রাম, বরিশাল ও নোয়াখালী উপকূলে তীব্র ঝড়ো জলোচ্ছ্বাস ও প্লাবন সংঘটিত হয়। ঘূর্ণিঝড়ে বাকেরগঞ্জের নিম্ন অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে প্লাবিত হয়। প্রায় দুই লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ব্রিটিশ শাসনের সেই সময়ে প্রায় দুই লাখ মানুষ দুর্যোগ পরবর্তী মহামারী ও দুর্ভিক্ষে মারা যান।