• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে বাংলাবাজারে


সোহানুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
বইমেলা ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে বাংলাবাজারে
বইমেলা ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে বাংলাবাজারে। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

দরজায় কড়া নাড়ছে অমর একুশে বইমেলা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মেলার আনুষ্ঠানিক যাত্রা। এর আগে মেলার সব কাজ শেষ করতে চলছে তোড়জোড়।

একই সঙ্গে এই মেলাকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন বইয়ের আদিনিবাস বাংলাবাজার। বাংলাবাজারের অলিগলি থেকে ভেসে আসা নতুন বইয়ের গন্ধই বলে দিচ্ছে অমর একুশে বইমেলার খবর।

জানা যায়, বই বিক্রি, বই ছাপানো ও সরবরাহ করার সবচেয়ে বড় কেন্দ্র হচ্ছে বাংলাবাজার। যাকে অনেকে বলে থাকেন বইয়ের বাড়ি অথবা বইয়ের আদি ঠিকানা। প্রত্যেক বছর অমর একুশে বইমেলা ঘিরে এখানকার প্রকাশকদের মাঝে ব্যস্ততা বাড়ে। জানুয়ারি মাসের এই সময়টায় এসে সেই ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। বাংলাবাজারে ছোট বড় মিলিয়ে প্রকাশকের সংখ্যা প্রায় চারশ। সবার মাঝেই এখন মেলার ব্যস্ততা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলা ঘিরে বাংলাবাজারে যেন দম ফেলার সময় নেই কারও। প্রকাশনায়, প্রেসে, বাঁধাইখানায় সমান তালে চলছে নতুন বইয়ের কাজ। মোটকথা বাংলাবাজার এখন নতুন বই নিয়ে নতুন সাজে সেজেছে।
যেসব বইয়ের পাণ্ডুলিপিতে আগে হাত পড়েছে সেগুলো এখন বাঁধাই হয়ে প্রকাশনায় আসছে। আর যেসব বইয়ের পাণ্ডুলিপি দেরিতে এসেছে, সেগুলোর প্রুফ চলছে অথবা প্রেসে রয়েছে। বাঁধাই করা বই আসছে ভ্যানে, ঠেলাগাড়িতে অথবা টুকরিতে করে। চরম ব্যস্ত বই বহনের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরাও। শ্রমিকদের অনেকেই মৌসুমীও বটে। বিশেষত, বইমেলা ঘিরেই শ্রমিকদের অনেকে বাংলাবাজারে আসেন।

ডিসেম্বরের শেষদিকে বাংলাবাজারে এসেছেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার রহিম মোল্লা। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “প্রায় এক দশক হয় বাংলাবাজারে বই বহনের কাজ করি। আগে গোটা বছরই থাকতাম। এখন তিন মাসের জন্য আসি। ফেব্রুয়ারি শেষ হলেই বাড়ি যাব। মূলত এই সময়ে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। আমরা এখানে চুক্তিভিত্তিক বই বহন করে থাকি।”

এদিকে এবারের বইমেলায় কাগজের উচ্চমূল্যের প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, কাগজের দামের কারণে বাড়ছে বইয়ের দাম। প্রকাশনা ও কাগজভেদে বইয়ের দাম বেড়েছে ২০-৫০ শতাংশ।

পার্ল পাবলিকেশনের ম্যানেজার মো. ফারুকী হোসাইন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “কাগজের মূল্যের কারণে প্রকাশকরা কমিয়েছেন বইয়ের সংখ্যা। কাগজের মূল্য দ্বিগুণেরও বেশি। তাই আমরা ঝুকি নিতে চাচ্ছি না। বইয়ের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। বইয়ের উচ্চমূল্যের কারণে বাজারে খুব ভালো অবস্থা দেখতে পাচ্ছি না।”

বাংলাবাজারের সময় প্রিন্টার্সের এক কর্মচারী বলেন, “মেলা উপলক্ষে আমাদের অধিকাংশ বই প্রিন্ট হয়ে গেছে। এখন চলছে বাঁধাইয়ের কাজ। ব্যস্ততা আরও দুই সপ্তাহ থাকবে। আর বাংলাবাজারে ব্যস্ততা থাকবে বইমেলার পুরো সময় ধরেই।”

অনন্যা প্রকাশনীর প্রকাশক মনিরুল হক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “মেলা ঘিরেই সাধারণত এখন বই প্রকাশ হয়ে আসছে। অন্য সময়েও বই প্রকাশ হয়। তবে বাংলাবাজারে বই প্রকাশের আনন্দ মেলে জানুয়ারি ও ফ্রেব্রুয়ারিতে। আর এই সময়ে নতুন বইয়ের গন্ধই আলাদা।”

Link copied!