ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারকে খুনের উদ্দেশে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার শিলাস্তি রহমানের জামিন আবেদন আবারও নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে শিলাস্তি রহমানের আইনজীবী তার জামিন চেয়ে আবেদন আবেদন করেন।
এর আগে গত ১১ জুন শিলাস্তি রহমানের জামিন চেয়ে একই আদালতে আবেদন জানিয়েছিরেন তার আইনজীবী। তবে সে সময়েও শিলাস্তির জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী তখন আদালতকে বলেছিলেন, মক্কেলকে হয়রানি করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাই সে জামিন প্রাপ্য।
তবে রাষ্ট্রপক্ষ প্রথম আবেদনের বিরোধিতা করে জানায়, শিলাস্তি রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া তিনি গত ৩ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাই তার জামিন আবেদন খারিজ করা হোক।
গত ২২ মে শেরেবাংলা নগর থানায় নিহত এমপির মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে অপহরণ মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত ২৪ মে আসামি শিমুল ভুইয়া, তানভীর ভুইয়া ও শিলাস্তি রহমানের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
পরে ৩১ মে দ্বিতীয় দফায় তাদের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে তারা দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। বর্তমানে তারা কারাগারে আটক রয়েছেন।
গত ২২ মে আনোয়ারুল আজীমকে খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই।
এরপর ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল- ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমি অমিত শাহের কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো।’ এ ছাড়াও আরও কয়েকটি মেসেজ আসে। মেসেজগুলো বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজখবর করতে থাকি। আমার বাবার কোনো সন্ধান না পেয়ে বাবার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস কলকাতার বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। বাবাকে খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তীসময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবাকে অপহরণ করেছে।