আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য বিভিন্নভাবে ইতিহাস বিকৃত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, “সত্যের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই আওয়ামী লীগের। তারা গত ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে গায়ের জোরে।”
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা যখনই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিই, সরকার তখনই বলে আমরা নাকি ভায়োলেন্স করব। অথচ গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তারাই শুরু করেছিল।”
ড. মোশাররফ বলেন, “ঢাকা বিভাগের সমাবেশ থেকে আমরা ১০ দফা দিয়েছিলাম। ১০ দফার মূল কথা ছিল, এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে। দেশে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। দেশের মানুষ যাতে নিজের হাতে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।”
‘বিএনপি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যে মোশারফ বলেন, “আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই। তারা গত ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে দিনের ভোট রাতে করে। দেশের রাষ্ট্রকাঠামো একটি একটি করে ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৭২-৭৫ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। সেই সময় তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে, বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। দেশে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির নামে লুটপাটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা করেছিল।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আমান উল্লাহ আমান বলেন, “শেখ হাসিনা ১৪, ১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চান। কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি। আজকে আলোচনা করবেন না, উনি (প্রধানমন্ত্রী) কথা বলবেন না। ওনার মনমতো উনি নির্বাচন করবেন। আমরা বলতে চাই, ১৪ সাল এবং ১৮ সাল ভুলে যেতে হবে। এই দেশের নির্বাচন হলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সেটা যদি আপনি না করেন। তবে ৫২, ৬৯, ৯০ এর মতো আরেকটি গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত করা হবে। এভাবে নির্বাচন হলে ইনশা আল্লাহ জনগণের সরকার নির্বাচিত হবে। সেই সরকার হবে বিএনপি সরকার।”
সভাপতির বক্তব্য মির্জা আফরোজা আব্বাস বলেন, “১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগের বিএনপির সমাবেশ কেন্দ্র করে সরকার যে ক্রাকডাউন করে হাজার হাজার গ্রেপ্তার করেছে। তারা সমাবেশকে নষ্ট করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। এই সরকারের আমলে নারীরা বেশি নির্যাতিত হয়েছে। নারীরা কান্না করে, গুম, খুন, গ্রেপ্তার হওয়া স্বামী-সন্তানদের জন্য। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা আর ভয় করি না।”
মহিলা দলের সভাপতি মির্জা আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় বিএনপির গ্রেপ্তার হওয়া সব নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেত্রী ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।