বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী আজ (২৩ জুলাই)। তিনি ১৯২৫ সালের এই দিনে গাজীপুরের কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
আজীবন সংগ্রামী রাজনীতিবিদ ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করতেন তিনি। ১৯৪৩ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হওয়ার পরের বছরই ১৯৪৪ সালে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাজউদ্দিন।
পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত এ সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৬৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী তাজউদ্দীন ১৯৭০ সালে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সদস্য হিসেবে তিনি ভাষা আন্দোলনকালে গ্রেপ্তার হন এবং নির্যাতন ভোগ করেন। ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এলএলবি পাস করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তাজউদ্দীন ভারতে যান এবং প্রবাসী সরকার গঠনের চিন্তা করেন। ৪ এপ্রিল দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাজউদ্দীনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। ১০ এপ্রিল তিনি আগরতলায় সরকার গঠন করার উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধকে সফল সমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে তার অবদান ছিল অসামান্য।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর, তাজউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় আরও তিন নেতা এএইচ এম কামরুজ্জামান, এম মনসুর আলী ও সৈয়দ নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাজউদ্দীনকে হত্যা করা হয়।