খিলগাঁও তালতলা এলাকায় শহিদ বাকি সড়কের দুই ধারে গড়ে উঠেছে অসংখ্য রেস্তোরাঁ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়কটিতে লোকজনের আনাগোনা লেগেই থাকে। আর সন্ধ্যার পর এলাকাটি হয়ে উঠে ভোজনরসিকদের মিলনমেলা। এক পলকের দেখায় মনে হতে পারে, রাজধানীর বুকে গড়ে উঠা এটি একটি রেস্তোরাঁ পাড়া। কিন্তু বর্তমান চিত্র ঠিক উল্টো।
বুধবার (৬ মার্চ) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দু-একটি রেস্তোরাঁ ছাড়া প্রায় সবগুলোই বন্ধ। রাস্তার পাশে অনলাইনে খাবার সরবরাহকারীরা অবসর সময় কাটাচ্ছেন। নেই লোক সমাগম। যেসব হোটেল খোলা রয়েছে, সেখানেও দুই একজন ছাড়া পুরোটাই খালি। সবমিলিয়ে রেস্তোরাঁ পাড়া এখন সুনসান।
স্থানীয়রা বলছেন, রেস্তোরাঁগুলো মঙ্গলবার (৫ মার্চ) থেকে বন্ধ রয়েছে। বন্ধ থাকার কারণ সম্পর্কে সকলেই অজানা। অপরদিকে দায়িত্বশীলদের দাবি, অভিযান পরিচালনার খবরে মালিক-কর্তৃপক্ষরা বন্ধ করে রাখছেন।
এদিকে বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডের পর বেশ তোড়জোড় অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে দায়িত্বশীলরা। যার ফলশ্রুতিতে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহিদ বাকি সড়কের রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে সেখানকার রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ পেয়ে দুপুর ১টার দিকে অভিযান স্থগিতের ঘোষণা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম।
অনলাইনে খাবার সরবরাহ করেন মেহেদি হাসান। রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ থাকায় আজ অপেক্ষার প্রহর গুনছেন অর্ডারের (ফরমায়েশ) জন্য। মেহেদি হাসান বলেন, “অভিযান পরিচালনার পর থেকেই রেস্তোরাঁ বন্ধ। খোলা থাকলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫-৭টি অর্ডার (ফরমায়েশ) পাই। আজকে মাত্র ৪টা পেয়েছি। আমাদের আয় হয় অর্ডারের ওপর। রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় আয় কম হবে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালতলার এক ব্যবসায়ী বলেন, “মঙ্গলবার থেকেই রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ। কিন্তু কেন বন্ধ করা হয়েছে তা জানি না। এখন এগুলো না দেখে, যখন ভবন তৈরি করা হয়েছে তখন দেখলে ভালো হতো।”
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, “সিটি করপোরেশন ও রাজউকের অভিযানে ফায়ার সার্ভিস সহযোগিতা করছে। অভিযান পরিচালনার সময় মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে দোকান বন্ধ করে মালিক-কর্তৃপক্ষ পালাচ্ছে।”
মঙ্গলবার অভিযান পরিচালন পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম জানান, খিলগাঁও এলাকায় অভিযানে এসে একটি ভবনে অভিযান শুরু করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সেই খবর পেয়ে বাকিরা সকাল থেকে রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখে। রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ থাকার কারণে খিলগাঁও এলাকায় আর অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয়নি।