৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হতে শুরু হয়েছে ফিরতি পথের ভোগান্তি। এক সঙ্গে অনেক মানুষের চাপের কারণে সুযোগ নিচ্ছে গণপরিবহনগুলো। আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। অনেকে বাধ্য হয়ে ফিরতে হচ্ছে গন্তব্যে।
২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমা রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ২২ মিনিটের আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে।
মোনাজাত শেষে ঢাকার পথে ঢল নামে মুসল্লিদের। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে সড়কগুলো নিয়ন্ত্রিত থাকায় দেখা দেয় পরিবহন সংকট। ফলে ফিরতি পথে শুরু হয় মুসল্লিদের বিড়ম্বনা। অল্প যেসব গণপরিবহন চলছে সেগুলোতে গেট লক সার্ভিসের নামে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। এছাড়া পিকআপ ভ্যান ভরে অতিরিক্ত ভাড়ায় ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছেন ইজতেমা ফেরত মুসল্লিরা। সব মিলিয়ে ফিরতি পথেও পদে পদে বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে মুসল্লিদের।
ইজতেমা মাঠ পেরিয়ে আব্দুল্লাপুর অংশ থেকে বিভিন্ন পিকআপ ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, দুই একটি বাস বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হাঁকাডাক দিয়ে যাত্রী ডেকে নিচ্ছে। বলা হচ্ছে, যেখানেই যাবেন ভাড়া ১০০ টাকা, না হলে বাসে তোলা হচ্ছে না। গেট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। পিকআপেও যাত্রী ঠেসে তুলে ১০০ টাকা করে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের রীতিমত জিম্মি করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। পাশাপাশি আগে থেকেই ভর্তি হয়ে আসা গণপরিবহন গুলো মাঝপথে থামানো হচ্ছে না। ফলে মাঝপথের যাত্রীরা আরও বেশি বিড়ম্বনায় পড়েছেন তাদের হেঁটেই ফিরতে হচ্ছে। অন্যদিকে ঢাকায় প্রবেশ করা ট্রেনগুলোতেও কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে, ছাদ ভর্তি হয়ে মুসল্লিরা ফিরছেন।
উত্তরার হাউজ বিল্ডিংয়ের সামনের রাস্তা থেকে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলার যাত্রী ডাকছিল মাঝারি একটি পিকআপের হেলপার বাবুল মিয়া। তিনি বলেন, যেখানেই যাবেন ১০০ টাকা, বাড্ডা নেমে গেলেও ১০০ টাকা আবার যাত্রাবাড়ী গেলেও ১০০ টাকা। সড়কে বাস নেই, ইজতেমা শেষে এই এক ট্রিপ নিয়ে যাব বলে ভোরে এখানে এসেছি গাড়ি নিয়ে। তাই একটু ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কোনো মানুষ তো যাওয়ার জন্য গাড়ি পাচ্ছে না।
মোনাজাত শেষে একটি পিকআপে খিলক্ষেত এসে নেমেছেন এনামুল হক নামের একজন মুসল্লি। তিনি বলেন, মোনাজাত শেষে বাসায় ফিরতে কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না। হুড়োহুড়ি করে একটি পিকআপে উঠেছি। কিন্তু আমি খিলক্ষেত নামলেও আমার আছে ১০০ টাকাই ভাড়া রেখেছে। তারা বলছে, যেখানেই নামেন ভাড়া ১০০ টাকা। তাই বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হলো। তবে আসলে বেশি সমস্যায় পড়ছে মাঝ পথের মানুষরা। তারা যাওয়ার জন্য কোনো গণপরিবহন পাচ্ছে না। আর এই সড়কে এখনও সেভাবে বাস চলাচল শুরু করেনি।
অন্যদিকে সড়কে পিকআপের পাশাপাশি বিভিন্ন সিএনজি, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে চুক্তিতে অতিরিক্ত ভাড়ায় বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে গেছে মুসল্লিদের। আর মোনাজত শেষে সিংহভাগ মুসল্লি হেঁটেই নিজ গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে।