রাজধানীর প্রেসক্লাব মোড়ে রাস্তায় পুলিশের একটি এপিসিতে (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) লাল রঙ দিয়ে ‘ভুয়া’ লেখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের গাড়িতে লাল রঙের কারণ হিসেবে আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, “তারা আমাদের রক্ত নিয়েছে। আমরা তো শুধু লাল রঙ দিয়েছি।”
ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই। কিন্তু আমরা এটা করতে বাধ্য হয়েছি।”
এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রেসক্লাবে জড়ো হন শিক্ষক, সাংস্কৃতিককর্মী, চিকিৎসক আইনজীবী, বুদ্ধিজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। পরে দ্রোহযাত্রা নামে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এটি প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায়।
বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে দ্রুত কারফিউ প্রত্যাহার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়াসহ নানা দাবি তোলা হয়। এর আগে সম্প্রতিক সময়ে সহিংসতায় নিহতদের মাগফেরাত কামনা করে বাদ জুময়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোনাজাত করা হয়।
পূর্বঘোষিত ৯ দফাসহ আটক শিক্ষার্থীদের দ্রুত মুক্তির দাবিতে সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে মিছিল-স্লোগানে প্রতিবাদ জানান আন্দোলনকারীরা। অংশ নেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাদের সমর্থন জানান শিক্ষক ও অভিভাবকরাও।
সকালে রাউজক উত্তরা মডেল কলেজের সামনে জড়ো হন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। সঙ্গে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড। স্লোগানে স্লোগানে তুলে ধরেন নিজেদের দাবি দাওয়। জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা গণমিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে কলেজের সামনে তাদের এই অবস্থান।
বৃষ্টিতে শুধু শিক্ষার্থীরাই ভিজেছেন তা কিন্তু নয়, ভিজে ভিজে সন্তানদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন শিক্ষক ও অভিভাবকরাও। আটক শিক্ষার্থীদের দ্রুত মুক্তি কামনা করেন তারা।
রাজপথে নামেন ইস্টওয়েস্ট, ব্র্যাক, ইউআইইউসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একত্র হয়ে বের করেন গণমিছিল। পুলিশি নিরাপত্তায় মিছিলটি প্রগতি সরণি প্রদক্ষিণ করে আবারও ইস্টওয়েস্ট ক্যাম্পাসে ফিরে যায়।
শুধু রাজধানীতে নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানেই আন্দোলনের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
গত ১ জুলাই থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় দুই সপ্তাহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চললেও এক পর্যায়ে তা আর শান্তিপূর্ণ থাকেনি। দেশব্যাপী সংঘাত সংঘর্ষে হতাহত হন অনেকে।